Logo
Logo
×

সারাদেশ

কোল্ড ইনজুরিতে বোরো বীজতলা-আলু নষ্টের শঙ্কায় কৃষক

Icon

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:২১ পিএম

কোল্ড ইনজুরিতে বোরো বীজতলা-আলু নষ্টের শঙ্কায় কৃষক

রাজশাহীতে শৈত্যপ্রবাহ আর ঘন কুয়াশার কারণে বোরো ধানের বীজতলা ও আলুর কোল্ড ইনজুরিসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে চাষিদের বোরো ধানের বীজতলার চারা লালচে এবং হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। আর জেলার কিছু কিছু এলাকায় আলু গাছের পাতা ও ডগা পচা রোগ দেখা দিয়েছে।

আবহাওয়া এমন থাকলে এই দুই ফসলসহ শীতকালীন বিভিন্ন ফসলের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহীতে ৩ হাজার ৪৭১ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। আর আলুর চাষ হয়েছে ৩৪ হাজার ৯৫৫ হেক্টর জমিতে। তবে এই দুই ফসল নিয়ে আপাতত চিন্তার কোনো কারণ নেই। আবহাওয়ার এমন অবস্থা বেশ কয়েকদিন বিরাজ করলে বোরো বীজতলা ও আলুর কিছুটা ক্ষতি হতে পারে।

রাজশাহী কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বোরো মৌসুম শুরু হয়েছে। রাজশাহী জেলায় বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবছর বেড়েছে বোরো ধানের চাষ। এ বছর রাজশাহী জেলায় বোরো ধানের চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ হাজার ১৬৫ হেক্টর। গত বছরের চেয়ে প্রায় ১০০ হেক্টর বেশি জমিতে বোরোধানের চাষ হবে হলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা। রাজশাহী জেলায় এখন পর্যন্ত বোরোধানের চাষ হয়েছে ১ হাজার হেক্টর।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যাবেক্ষণাগারের লতিফা হেলেন বলেন, সোমবার রাজশাহীতে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। গত কয়েক দিন থেকে রাজশাহীর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কম থাকায় শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। এছাড়া পশ্চিম-উত্তর দিক থেকে বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় আদ্রতা অনেক বেশি। সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৭ শতাংশ। যদিও বিকাল ৩টায় সেটি কমে ৮৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আগামী ২-১ দিন শীতের তীব্রতা বেশি থাকবে। এরপর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলেই তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান এই আবাহওয়াবিদ।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, বোরোর বীজতলায় কোথাও হলুদ, কোথাও লালচে বর্ণ ধারণ করেছে। আবার অনেক জায়গায় গাছ বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো বীজতলার চারা মারা যেতে শুরু করেছে। তবে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত বীজতলা সেরে উঠবে। কুয়াশা থেকে রক্ষার জন্য পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে।

পবার হরিয়ান ইউনিয়ন এলাকার কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন আগেও বোরো ধানের বীজতলা সবুজ ছিল। কয়েক দিনের তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে ধানের চারার পাতা মরে যাচ্ছে। পুরো বীজ তলায় এমন হচ্ছে। এতে বোরো ধানের চারা মারা যাওয়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আর কুয়াশার জন্যই এমন হচ্ছে। এমন কুয়াশা অব্যাহত থাকলে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাবে।

গোদাগাড়ী উপজেলার কাদিপুর এলাকার কৃষক আজমল হক বলেন, কয়েক দিন থেকে দুপুরের পরে কিছুটা সূর্যের দেখা মিলছে। তবে নেই রোদের তাপ। সন্ধ্যার পরে থেকে বইছে হিমেল হাওয়া। আর গভীর রাত থেকে পড়ছে কুয়াশা। ফলে হলুদ হয়ে গেছে ধানের চারা। এমন অবস্থা আরও কয়েক দিন থাকলে ধানের চারার পাতা মরে যাবে।

তানোরের আলুচাষি আব্দুল হামিদ বলেন, আমি ৩০ একর জমিতে আলু চাষ করেছি। যেভাবে শীতের তীব্রতা বেড়েছে তাতে আলুর গাছের পাতা ও গোড়া পচা রোগের আশঙ্কা করছি। আবহাওয়ার এমন অবস্থা বিরাজ করলে অনেক বেশি লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, এখনো শীতের কুয়াশার কারণে সেভাবে বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়নি। তবে আমরা কৃষকদের পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দিচ্ছি। আর এখন কৃষকরা অনেক বেশি সচেতন। আলুর ক্ষেত্রেও কৃষকরা নিয়মিত পরিচর্যা করছেন। স্প্রে করছেন যাতে শীতের কারণে কোনো রোগবালাই আক্রমণ করতে না পারে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম