নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নয়, শ্রেণিকক্ষে মিলছে পোড়া গন্ধ
চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪৫ পিএম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদ্যালয়টি ছিল একটি ভোটকেন্দ্র; কিন্তু ভোটের দুদিন আগেই দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে পুড়ে যায় বিদ্যালয়টির তিনটি শ্রেণিকক্ষ। ৭ জানুয়ারি পোড়া কক্ষেই ভোটগ্রহণ হলেও গত পাঁচ দিনে পাঠদান শুরু করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনা ঘটেছে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট পৌর এলাকার ধলাইপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে।
উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের আশ্বাস দিলেও ক্লাস কিভাবে চলবে তার নির্দেশনা কেউ দিতে পারেননি। তবে উপজেলা প্রশাসন বিকল্পভাবে দ্রুত ক্লাস চালুর চেষ্টা করছে।
এদিকে সরেজমিন দেখা যায়, কক্ষগুলোতে এখনো বইয়ের ঘ্রাণ নয়, মিলছে পোড়া গন্ধ। গত ৫ জানুয়ারি দিবাগত রাতে টিনশেড ঘরের তিনটি শ্রেণিকক্ষ আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে শ্রেণিকক্ষের সব সামগ্রী। ধোঁয়ায় কালো হয়ে গেছে শ্রেণিকক্ষের দেয়াল। রুমে রুমে পড়ে আছে পোড়া বেঞ্চ ও ডেক্স। আগুনের তাপে খসে পড়েছে দেয়ালের পলেস্তারা।
রোববার দুপুরে সরেজমিন বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি শ্রেণিকক্ষের পুড়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের বেঞ্চ, শিক্ষকদের সামনে থাকা টেবিল ও ব্ল্যাকবোর্ড পুড়ে গেছে। এমনকি আগুনের উত্তাপে শ্রেণিকক্ষের বৈদ্যুতিক পাখাগুলোর কাঠামোও গলে নিচে পড়ে রয়েছে। এছাড়া কক্ষের চারপাশের দেয়াল ও ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত শ্রেণিকক্ষ ছাড়াও সামনের দেয়াল কালো হয়ে আছে। শ্রেণিকক্ষের ভেতরে পড়ে রয়েছে বেঞ্চের কাঠামো। ছাই পড়ে রয়েছে পুরো শ্রেণিকক্ষে।
প্রধান শিক্ষক সারমিন জাহান মজুমদার জানান, বিদ্যালয় খোলার দিন শিক্ষার্থীরা এসে তাদের প্রিয় শ্রেণিকক্ষ আগুনে পোড়া দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে। ক্লাস নেওয়ার জায়গা নেই- তাই এখন অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসছে না। যারা আসছে তাদের বিকল্প উপায়ে মেঝেতে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা। তিনি আরও জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বের করা সম্ভব নয়। পুরো ঘর পুড়ে গেছে- কোনো কিছুই অবশিষ্ট নাই, দেয়ালও খসে পড়ছে। এখানে ক্লাস করা বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা রায়হানা বলেন, আমি বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে প্রধান শিক্ষককে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং চাহিদা জানাতে নির্দেশনা দিয়েছি। পেলেই আমরা তা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব, যাতে দ্রুত ভবনটি মেরামত করা হয়। তবে পৌরসভা এবং আমাদের বিকল্প বরাদ্দ দিয়ে আমরা দ্রুত ভবন মেরামত করে ক্লাস শুরুর চেষ্টা করছি।