টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচিত সংসদ সদস্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাককে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর প্রকাশ্যে পেটানোর হুমকির আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ। 

লতিফ সিদ্দিকীকে ফ্যাসিস্ট-নাস্তিক অভিহিত করে তার আপত্তিকর, মানহানিকর, কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা আওয়ামী লীগ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এমন দাবি করেছে। 

সংবাদ সম্মেলনে রাজ্জাকের বিরুদ্ধে লতিফ সিদ্দিকীর আপত্তিকর এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে আন্দোলন ও আইনগত ব্যবস্থার উদ্যোগসহ যুগপৎ কর্মসূচি নেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইয়াকুব আলী।

এ সময় মধুপুর পৌরসভার মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. মীর ফরহাদুল আলম মনি, সাদিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সদস্য অধ্যাপক গোলাম ছামদানী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শরীফ আহমেদ নাছির, নারী ভাইস চেয়ারম্যান যষ্ঠিনা নকরেক, মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান, মোতালেব হোসেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ সজীবসহ দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়- কোনো সম্মানীয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ রকম অসম্মানজনক কথা সভ্য, ভদ্র মানুষ বলতে পারেন না। কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে লতিফ সিদ্দিকী যা বলেছেন তা শিষ্টাচারবহির্ভূত ও বিবেক বিবর্জিত। পবিত্র হজ নিয়ে ইতোমধ্যে আপত্তিকর বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য সন্তান আইটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে বক্তব্য দিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন এই লতিফ সিদ্দিকী। মন্ত্রী থাকা অবস্থায় সরকারি কর্মকর্তা তার হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন। অনেকেই তার কাছে অসম্মানিত হয়েছেন। মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান তার এই উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার দাবি করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে নেতারা আরও বলেন, লতিফ সিদ্দিকী অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন। তার আপত্তিকর কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে আন্দোলন করা হবে। দলীয়ভাবে পরামর্শ করে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

গত ৯ জানুয়ারি কালিহাতী থানা থেকে আটককৃত নিজ কর্মীদের ছাড়িয়ে নিতে থানার সামনের সড়কে সমর্থকদের নিয়ে অবস্থান নেন বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। অবস্থানকালে তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. রাজ্জাককে উদ্দেশ করে বলেন, ‘রাজ্জাককে আমি পেটাব। কত বড় নেতা হইছে। আমার টাকায় লেখাপড়া কইরা, ওয়ান-ইলেভেনে সংস্কারবাদী হইছে। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলে মাফ করিয়েছি। বেইমানের বাচ্চা ঘুস খেয়ে টাকা হইছে, ওর টাকা আমি... ঢুকামু ও তো আমারে চিনে না।’

তার এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়।