ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণী নীলগাই জবাই করে মাংস ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রায় দুই বছর আগেও একই ঘটনা ঘটেছিল এই উপজেলায়।
গত ৭ জানুয়ারি প্রায় বিলুপ্ত জাতের বন্যপ্রাণী নীলগাই দেখা মিলে জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার রাতোর ইউনিয়নের ভেলাই গ্রামে। এলাকার পুকুরপাড়ের ঝোপঝাড়ে ছোটাছুটি করছিল অপরিচিত এই প্রাণীটি।
গ্রামের কয়েকজনের নজরে এলে তারা প্রাণীটিকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক গ্রামবাসী সেখানে ভিড় জমান এবং প্রাণীটিকে নীলগাই হিসেবে নিশ্চিত করেন। এক সময় গ্রামবাসী নীলগাইটি জবাই করে মাংস নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেন।
রাতোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরৎ চন্দ্র রায় বলেন, গ্রামবাসী একটি নীলগাই আটক করে জবাই করে মাংস ভাগাভাগি করে নিয়েছে। বিষয়টি আমি শুনেছি। কাজটি তারা ঠিক করেনি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান জানান, নীলগাইটি জবাই করে দেওয়া ঠিক হয়নি। খবর পেয়ে বন বিভাগের লোককে সেখানে পাঠানো হয়েছে। তারা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
ঠাকুরগাঁও বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার তাসলিমা খাতুন বলেন, রাণীশংকৈল থানায় এ ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে রাণীশংকৈল থানার ওসি সোহেল রানা এ ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, বনবিভাগ জিডি আকারে অভিযাগ করেছে।
২০২২ সালের ১২ মে একই উপজেলার ধর্মগড় সীমান্ত দিয়ে নীলগাইটি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর বিরল প্রজাতির এই প্রাণীটি মন্ডলপাড়া গ্রামে ছোটাছুটি করছিল। গ্রামবাসী সেটিকে দেখতে পেয়ে ধাওয়া দিয়ে ধরে ফেলে। পরে তারা নীলগাইটি জবাই করেন।
ঘটনা তদন্ত শেষে রাণীশংকৈল থানায় জিডি করেন বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ রাজশাহীর বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির। ওই বছর ২১ নভেম্বর নয়জনের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
যাদের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে তারা হলেন- ওই গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, মোবারক হোসেন, একরামুল, আব্দুল খালেক, সুমন হোসেন, মাসুম রেজা ও মো. একরামুল হক।