৮০ নলকূপে তালা দেওয়ার অভিযোগ খাদ্যমন্ত্রীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে
নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:৫২ পিএম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁ-১ (নিয়ামতপুর-পোরশা-সাপাহার) আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মারপিট, বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলার অভিযোগ উঠেছে।
নওগাঁ-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী (ট্রাক প্রতীক) খালেকুজ্জামান শুক্রবার সকালে নওগাঁর রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতা খালেকুজ্জামান অভিযোগ করেন, ‘শুধু ট্রাক প্রতীকের নির্বাচন করার কারণে নিয়ামতপুর উপজেলার চন্দননগর, হাজিনগর, ভাবিচা ও রসুলপুরে ইউনিয়নে অন্তত ৮০টি গভীর নলকূপে (ডিপ টিউবওয়েল) তালা মেরে দিয়েছে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকরা। এত দিন এসব গভীর নলকূপ বৈধভাবে পরিচালনা করতেন আমার কর্মী-সমর্থকরা। চন্দননগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর ও করমজাই গ্রামে দুটি পুকুর সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়ে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা মাছ চাষ করে আসছিলেন; কিন্তু ভোটের পর দিন ওই পুকুর দুটিতে নৌকার সমর্থকরা বিষাক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করে। এতে মৎস্যজীবীদের প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী খালেকুজ্জামান বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরুর পর থেকেই নৌকার প্রার্থীর অনুসারী নেতাকর্মী ও সমর্থকরা আমার কর্মী-সমর্থকদের মারধর, আমার ট্রাক প্রতীকের নির্বাচনি ক্যাম্প ভাঙচুর ও ব্যানার-পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়। নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের এসব অন্যায়-অত্যাচারের কথা বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসে। নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করা হলে ত্বরিত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল; কিন্তু নির্বাচনের পরে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা ভোটের পর দিন থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আমার নির্বাচনি এলাকার বিভিন্ন স্থানে কর্মী-সমর্থকদের মারধর, তাদের গ্রামছাড়া করা, আমার কর্মী-সমর্থক হিসেবে পরিচিত ব্যক্তি পরিচালিত গভীর নলকূপগুলোতে তালা মেরে জোরপূর্বক নিয়ন্ত্রণ নেওয়া, জোর করে পুকুরের মাছ মেরে ভূরিভোজ (বনভোজন) করা এবং দোকনপাট ও বাড়িঘর ভাঙচুর করে।’
নির্বাচনপরবর্তী নৈরাজ্য বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে খালেকুজ্জামান বলেন, ‘৪০ বছরের বেশি সময় ধরে আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। জনগণের ভোটে চন্দননগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। এছাড়া আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পদে থেকে দায়িত্ব পালন করেছি। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে চেয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলাম; কিন্তু দল আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মনোনয়ন বঞ্চিতদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে উৎসাহ দিলে নির্বাচনে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করি। সেই নির্বাচনে আমি ৭৬ হাজার ১৯৩ ভোট পেয়ে নৌকার প্রার্থী সাধন চন্দ্র মজুমদারের কাছে পরাজিত হই। আমি বিশ্বাস করি, যারা ট্রাক ও নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়েছেন তারা সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক। আমার সমর্থকদের ওপর অন্যায়-অত্যাচার করা মানে আওয়ামী লীগের ওপর অন্যায়-অত্যাচার। নির্বাচনপরবর্তী নৈরাজ্য বন্ধের জন্য অচিরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’