Logo
Logo
×

সারাদেশ

সুজানগরে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীদের জন্য ১০ টাকায় থাকার হোটেল!

Icon

এমএ আলিম রিপন, সুজানগর (পাবনা)

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৫৫ পিএম

সুজানগরে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীদের জন্য ১০ টাকায় থাকার হোটেল!

পাবনার সুজানগরে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষদের জন্য গড়ে ওঠা ১০ টাকায় থাকার হোটেল দৃষ্টি কেড়েছে সবার। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল তাঁতিবন্দ ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামে গড়ে তোলা হয়েছে এ হোটেলগুলো।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দেশের উত্তরবঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী পাবনার সুজানগর উপজেলা। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পেঁয়াজের চারা রোপণের মৌসুমে এবং মার্চ থেকে এপ্রিল পেঁয়াজ মাঠ থেকে উঠানোর মৌসুমে রাজশাহী, বগুড়া, নাটোর, রংপুর, গাইবান্ধা, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে নিুআয়ের শত শত দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ শ্রম বিক্রি করতে আসেন এই উপজেলায়। প্রতিদিন হাড়ভাঙা কঠোর পরিশ্রম করে দরিদ্র শ্রমজীবী এসব মানুষ যে টাকা রোজগার করেন তা দিয়ে নিজে এবং বাড়িতে পরিবারের সংসার খরচ মেটাতেই হিমশিম খেতে হয় তাদের। সেখানে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার হোটেলে থাকাটা তাদের জন্য দুরুহ। কাজ করতে এসে অনেক শ্রমিক স্থানীয় সরকারি স্কুল, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খোলা বারান্দায় কনকনে শীতে রাত্রিযাপন করে থাকেন। আর এজন্য ওইসব দরিদ্র অসহায় শ্রমজীবী মানুষদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে মধুপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি গড়ে তুলেছেন ১০ টাকার থাকার হোটেল।

স্থানীয় মধুপুর গ্রামের আবুল হোসেন নামে এক হোটেল মালিক শনিবার যুগান্তরকে জানান, অনেক দূর দুরান্ত থেকে  শ্রমজীবী মানুষ এ অঞ্চলে কাজ করতে আসেন কিন্তু তাদের থাকার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই তাদের অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবং মানবিক দিক বিবেচনা করে এ হোটেল চালু করেছেন। প্রতিদিন ১০ টাকার বিনিময়ে একজন শ্রমজীবী  এখানে রাত্রিযাপন করতে পারেন। প্রতিটি টিনের ঘরের মাটির উপরের খরের বিছানার এ থাকার হোটেলটিতে একসঙ্গে ১২০ থেকে ১৫০ জন মানুষ রাত্রিযাপন করে থাকেন। থাকার সুবিধাসহ মোবাইল চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এ হোটেলটিতে। এছাড়া সারা দিন পরিশ্রম করে শ্রমজীবীরা যাতে বিনোদন করতে পারেন এজন্য টিভি দেখা ও ক্যারম খেলার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। তবে শীতবস্ত্র ও বালিশ যিনি থাকবেন তাকেই সঙ্গে নিয়ে আসতে হয়।

বগুড়া জেলার নন্দিগ্রাম থেকে আসা বাচ্চু হোসেন নামে এক শ্রমিক বলেন, এখানে তাদের মাথা গোঁজার একটু ঠাঁই হলেও শত শত শ্রমিকের জন্য পর্যাপ্ত ল্যাট্রিন না থাকায় বেশিরভাগ শ্রমিকেই খোলা মাঠে গিয়ে পায়খানা করতে হয়। মধুপুর হাজী অজেল আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ বলেন, বছরের প্রায় ৪ মাস বিভিন্ন জেলা থেকে নিু আয়ের মানুষ এ অঞ্চলে এসে কাজ করে থাকেন। কিন্তু পর্যাপ্ত ল্যাট্রিনের ব্যবস্থা না থাকায় খোলা আকাশের নিচে বিভিন্ন স্থানে মল ত্যাগ করায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। তাই সরকারিভাবে এ অঞ্চলে কয়েকটি  স্যানিটারি ল্যাট্রিন স্থাপনের দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, অতি দ্রুতই দরিদ্র শ্রমজীবীদের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে তিনি অস্থায়ী ভিত্তিতে নিজ উদ্যোগে কিছু স্যানিটারি ল্যাট্রিন স্থাপন করে দেবেন। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম