যেভাবে দিনমজুর থেকে কোটিপতি ভোলা
মো. আ. রহমান, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা)
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৫৫ পিএম
নিভৃত গ্রামের জামাল হোসেন ভোলা (৫০)। এক সময় দিনমজুর ছিলেন। সংসারে যেন নুন আনতে পান্তা ফুরায়। এরপর দরিদ্রের এই কশাঘাত থেকে বাঁচতে হাঁসের খামারের পরিকল্পনা নেন তিনি। ঠিক যেমন স্বপ্ন তেমন কাজ। মাত্র ২০টি হাঁস দিয়ে শুরু করেন খামারের যাত্রা। ওটা থেকেই ধীরে ধীরে তিনি এখন কোটিপতি।
সংগ্রামী এই উদ্যোক্তা জামাল হোসেন ভোলার বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের রামভদ্র গ্রামে। সম্প্রতি এই গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে তার খামারের চিত্র। শুধু হাঁসের খামারই না, আরও রয়েছে ডেইরি, মৎস্য ও পোল্ট্রি খামার। এসব খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকের।
জানা যায়, জামাল হোসেন জমানো টাকা দিয়ে ১৯৮৪ সালে ২০টি হাঁস কিনেন। সেই হাঁস দিয়ে যাত্রা শুরু খামারের। পর্যায়ক্রমে মাছ চাষ, মুরগি ও গরুর খামার গড়ে তোলেন। পাশাপাশি হার্ডওয়ার ও পোল্ট্রি খাদ্যের ব্যবসাও করেন। কিনেছেন প্রায় ৮-৯ বিঘা জমি। ছয় ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। মেধা ও পরিশ্রমে জীবনের ব্যবধানে দিনমজুর থেকে তিনি এখন কোটিপতি।
বর্তমানে তার ১ একর ৫২ শতক জমিতে রয়েছে পুকুর। সেই পুকুরে মাছ চাষ করেছেন। পুকুরের উপরে মুরগির শেড। শেডের পাশেই গরুর খামার। খামারে রয়েছে ১ হাজার ২০০ মুরগি। প্রতিদিন ডিম পাচ্ছেন ১ হাজার ১০০টি। ডিম বিক্রি করে মাসিক প্রায় ৫০ হাজার টাকা ও মাছ বিক্রি করে সাড়ে ১২ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। আরও আয় হচ্ছে ব্যবসা থেকেও।
ভবিষ্যতে একটি মডেল খামার গড়ে তুলবেন জামাল হোসেন ভোলা; যা দেখে খামার করতে মানুষ উদ্বুদ্ধ হবেন বলে তার স্বপ্ন।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা যায়, উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে ২১০টি গরুর খামার, ১৫০টি ছাগলের খামার, ৬০টি ভেড়ার খামার, ৩৮টি হাঁসের খামার ও ২৩৯টি মুরগির খামার রয়েছে। খামারকে কেন্দ্র করে উপজেলায় প্রায় ২৫টি ডিমের আড়ত, প্রায় ২৫০টি গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগির খাদ্য বিক্রির দোকান গড়ে উঠেছে। এসবের মধ্যে জামাল হোসেন ভোলা অন্যতম একজন খামারি।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম বলেন, গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালনে উপজেলার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করেছে। এই শিল্পের প্রসারে খামারিদের ঋণ সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।