Logo
Logo
×

সারাদেশ

কমলনগর উপজেলা ভূমি অফিস

রেট করে ঘুস নেন অফিস সহকারী

Icon

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৫৭ পিএম

রেট করে ঘুস নেন অফিস সহকারী

জমির নামজারি খতিয়ান খুলতে সরকার এক হাজার ১৭০ টাকা খরচ নির্ধারণ করে দিলেও তা মানছেন না লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা ভূমি অফিসের দায়িত্বশীলরা।

প্রতিটি নামজারি খতিয়ানে সেবাপ্রার্থীর কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যের কয়েকগুণ বেশি আদায় করা হচ্ছে। এমন কী, নামজারি খতিয়ানের ‘ডিসিয়ার’ রশিদ কাটাতে সেবাপ্রার্থী প্রতি সর্বনিম্ন তিন হাজার ৭০০ টাকা থেকে শুরু করে নয় হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া নির্ধারিত রেট করে সরাসরি ঘুস গ্রহণ করার অভিযোগ রয়েছে কার্যালয়টির ‘অফিস সহকারী’ মো. বখতিয়ারের বিরুদ্ধে। তার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার মিলছে না বলে অভিযোগ সেবাপ্রার্থীদের।

সূত্র মতে, নামজারির আবেদনের জন্য কোর্ট ফি ২০ টাকা, নোটিশ জারি ফি ৫০ টাকা, রেকর্ড সংশোধন বহালকরণ ফি ১ হাজার টাকা ও প্রতি কপি মিউটেশন খতিয়ান সরবরাহ বাবদ ১০০ টাকার বাইরে আর কোনো খরচ নেই। তবে এ অফিসটির চিত্র একেবারেই ভিন্ন। গ্রাহকরা নির্দিষ্ট ফি দিয়ে মোবাইল অথবা কম্পিউটারে ই-নামজারির আবেদন করার পর প্রথমে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার আবেদনকারী ব্যক্তিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অফিসে ডেকে আনেন। আবেদনটি চূড়ান্ত করতে উপজেলা ভূমি অফিসের জন্য খরচের কথা বলে প্রতিটি আবেদনের বিপরীতে ৬ থেকে ২০ হাজার টাকা এমন কী জমির পরিমাণ ভেদে ও কাগজপত্রে গরমিল থাকলে ৩০ থেকে ৫০ হাজার পর্যন্ত মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। এসব চুক্তিতে রাজি না হলে শুধু আবেদনকারীর অনলাইন আবেদনের মেসেজটি উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তাকে (এসিল্যান্ড) সেন্ড করা বাবত দুই হাজার টাকা নেন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার। এরপর কর্মকর্তা আবেদনটি যাচাই করার জন্য উপজেলা সার্ভেয়ারের কাছে পাঠান। সার্ভেয়ার যাচাই-বাছাই করে ফের কর্মকর্তার কাছে পাঠানোর পর তিনি তা চূড়ান্ত অনুমোদন দিলেই তবে আবেদনকারী অনলাইনে সরকার নির্ধারিত ১১শ টাকা (রাজস্ব) পরিশোধ করে অফিস থেকে চালান কপি (ডিসিয়ার) সংগ্রহ করবেন। কিন্তু এখানেই যত বিপত্তি। কর্মকর্তার অনুমোদন দেওয়া ফাইল আটকে দিয়ে মোবাইলে আবেদনকারীকে অফিসে ডেকে আনেন অফিস সহকারী বখতিয়ার। অফিস খরচের কথা বলে আবেদনকারী থেকে ফাইলপ্রতি তিনি রেট করে তিন হাজার ৭০০ টাকা ঘুস নেন। এমন কী, জমি বেশি হলে ঘুসের পরিমাণ ১০ হাজার পর্যন্ত নেন তিনি।

এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে একটি নামজারি খতিয়ানের (ডিসিয়ার) রশিদ কাটতে গেলে এ প্রতিবেদকের কাছে প্রকাশ্যে ৩ হাজার ৭০০ টাকা দাবি করেন বখতিয়ার। পরে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করার বিষয়ে এসিল্যান্ডের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বখতিয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অফিস সহকারী মো. বখতিয়ার সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আপনার সঙ্গে আমি এ বিষয়ে পরে কথা বলব।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফেরদৌস আরা জানান, অভিযোগগুলো তিনি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাজিয়া পারভীন জানান,  এসব বিষয়ে কখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে দেখবেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম