Logo
Logo
×

সারাদেশ

শেষ বাজেট ঘোষণা করে যা বললেন মেয়র আরিফ

Icon

সিলেট ব্যুরো

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৩, ১১:০০ পিএম

শেষ বাজেট ঘোষণা করে যা বললেন মেয়র আরিফ

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯২৫ কোটি ৪ লাখ ৪৯ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করলেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বাজেট ঘোষণার শুরুতেই আরিফ বললেন, এটাই আমার মেয়র হিসেবে শেষ বাজেট।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কুশিয়ারা কনভেনশন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিসিক মেয়র এ বাজেট ঘোষণা করতে শুরু করেন। এ বাজেটে প্রণয়নকৃত আয় ও ব্যয় সমপরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে।

দুদফা মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের শেষপর্যায়ে এসে মেয়র আরিফ কিছু অভিমান, অভিযোগ ও তুলে ধরেন বাজেট ঘোষণার সময়। তিনি অভিযোগ করেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের উন্নয়নে বৈষম্য করা হয়েছে। অবিচার করা হয়েছে আমার ওপর।

সিসিক মেয়র বলেন, বিগত বছর বন্যার কারণে সিলেটের লাখ লাখ মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ ও কষ্ট সহ্য করেছে। বন্যার পর থেকে সরকারের তরফ থেকে শহর রক্ষা বাঁধ তৈরি, নদী খননসহ নানামুখী আশার বাণী শুনেছিলাম কিন্তু এখন পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

দ্বিতীয় দফায় মেয়র হিসেবে আরিফুল হক চৌধুরীর আগামী ৭ নভেম্বর দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার ১২ দিন আগেই মেয়র হিসেবে শেষ বাজেট ঘোষণা করলেন তিনি।

বাজেটে উল্লেখযোগ্য আয়ের খাতগুলো হলো- হোল্ডিং ট্যাক্স ৪৮ কোটি ৩৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা, স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের উপর কর ২৫ কোটি টাকা, ইমারত নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণের উপর কর ২ দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা, ট্রেড লাইসেন্স ১০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, বিজ্ঞাপনের উপর কর ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বিভিন্ন মার্কেটের দোকান গ্রহীতার নাম পরিবর্তনের ফি ও নবায়ন ফিস বাবদ ৮০ লাখ টাকা, ঠিকাদারি তালিকাভুক্ত ও নবায়ন ফিস বাবদ ৩০ লাখ টাকা, ল্যাব টেস্ট ফিস বাবদ ৬০ লাখ টাকা, বাস টার্মিনাল ইজারা বাবদ আয় ২ কোটি টাকা, ট্রাক টার্মিনাল ইজারা বাবদ আয় ৫০ লাখ টাকা, খেয়াঘাট ইজারা বাবদ ২০ লাখ টাকা, সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি ও দোকান ভাড়া বাবদ ৫ কোটি টাকা, রোড রোলার ভাড়া বাবদ আয় ৫০ লাখ টাকা, রাস্তা কাটার ক্ষতিপূরণ বাবদ আয় ৩০ লাখ টাকা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে আয় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, দক্ষিণ সুরমায় জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু পার্কের টিকিট বিক্রয় থেকে আয় ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকাসহ রাজস্ব হিসাব উপাংশ ১ এ মোট ১০৫ কোটি ১২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং পানির সংযোগ লাইনের মাসিক চার্জ বাবদ ৭ কোটি টাকা, পানির লাইনের সংযোগ ও পুনঃসংযোগ ফিস বাবদ ১ কোটি ২০ লাখ টাকা, নলকূপ স্থাপনের অনুমোদন ও নবায়ন ফি বাবদ ২ কোটি ৫০ লাখ টাকাসহ রাজস্ব হিসাব উপাংশ ২ এ মোট ১৮ কোটি ২৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা।

নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্সসহ অন্যান্য বকেয়া পাওনা পরিশোধ করলে বাজেট বছরে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব খাতে সর্বমোট ১২৩ কোটি ৪০ লাখ ১১ হাজার টাকা আয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাজেটে সিলেট সিটি করপোরেশন, নন-ডিপিপি এবং ডিপিপি সরকারি অর্থায়নে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন খাতে প্রাপ্তি ৫২৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা এবং নিজস্ব মার্কেট নির্মাণ খাতে ৩৭ কোটি টাকা আয় ধরা হয়েছে।

এবারের বাজেটে রাজস্ব খাতে সর্বমোট ১১২ কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ সংস্থাপন খাতে ৫২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, শিক্ষা খাতে ব্যয় ৪ কোটি ১০ লাখ টাকা, স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় ১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, পরিচ্ছন্নতা খাতে ব্যয় ১৯ কোটি ৬০ টাকা, বিদ্যুৎ প্রকৌশল/সড়ক বাতি খাতে ব্যয় ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা, সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন খাতে ব্যয় ৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা, বিবিধ ৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা, এর মধ্যে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ খাতে ৫০ লাখ টাকা, বৃক্ষরোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৪৫ লাখ টাকা, মোকদ্দমা ফি ও পরিচালনা ব্যয় বাবদ ৫০ লাখ টাকা, জাতীয় দিবস উদযাপন খাতে ৯০ লাখ টাকা, নাগরিক সম্বর্ধনা ও আপ্যায়ন ব্যয় বাবদ ৮০ লাখ টাকা, খেলাধুলা ও সংস্কৃতি ব্যয় খাতে ১৫ লাখ টাকা, মেয়র কাপ ক্রিকেট, ফুটবল ও ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট ব্যয় বরাদ্দ ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, রিলিফ/জরুরী ত্রাণ ব্যয় বরাদ্দ ২ কোটি টাকা, আকস্মিক দুর্যোগ/বিপর্যয়/করোনা ব্যয় বরাদ্দ ২ কোটি টাকা, কার্যালয়/ভবন ভাড়া বাবদ বরাদ্দ ১ কোটি টাকা, নিরাপত্তা/সিকিউরিটি পুলিশিং ব্যয় খাতে ৯০ লাখ টাকা, ডিজিটাল মেলা আয়োজনে ব্যয় বরাদ্দ ২০ লাখ টাকা উল্লেখযোগ্য।

এছাড়া পানি সরবরাহ শাখার সংস্থাপন ব্যয়সহ পানির লাইনের সংযোগ ব্যয়, পাম্প হাউজ, মেশিন, পাইপ লাইন মেরামত সংস্কার ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধসহ মোট ১৮ কোটি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

বাজেটে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নে রাজস্ব খাতে ব্যয় বাবদ মোট ৩৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তন্মধ্যে রাস্তা নির্মাণ, রাস্তা মেরামত/সংস্কার, ব্রিজ/কালভার্ট নির্মাণ, ব্রিজ/কালভার্ট মেরামত/ সংস্কার, ড্রেন নির্মাণ/মেরামত, সরঞ্জাম যন্ত্রপাতি ও সম্পদ ক্রয়, সিটি করপোরেশনের ভবন নির্মাণ/মেরামত, সিটি করপোরেশনের নিজস্ব স্টাফ কোয়াটার নির্মাণ ও সংস্কার, ঢাকায় সিটি করপোরেশনের নিজস্ব লিয়াজো অফিসের জন্য ফ্ল্যাট ক্রয়, কসাই খানা নির্মাণ/ময়লা আবর্জনা ফেলার জায়গা উন্নয়ন, সিটি করপোরেশনের যানবাহন রক্ষায় গ্যারেজ নির্মাণ, সিটি করপোরেশনের যানবাহন রক্ষণাবেক্ষণে ওয়ার্কশপ নির্মাণ, হাট বাজার উন্নয়ন, বাস টার্মিনাল সংস্কার ও উন্নয়ন, সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় পাঠাগার নির্মাণ, নাগরিক নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন, গভীর নলকূপ স্থাপন, এমজিএসপি প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ কাজের নিজস্ব অর্থ ব্যয়, সিটি করপোরেশনের জন্য জিপ গাড়ি ও ২টি আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স ক্রয় এবং নারীদের উন্নয়নে প্রকল্প গ্রহণ ব্যয়সহ ইত্যাদি ব্যয় উল্লেখযোগ্য।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম