রাস্তায় ফেলে দেওয়া প্যারালাইসিস বাবাকে ফের বাসায় নিলেন ছেলে
চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৩, ০১:৩৪ পিএম
ছবি-যুগান্তর
মহাসড়কের পাশে ফেলে যাওয়া বৃদ্ধ চাঁন মিয়াকে (৭৫) পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে চাঁন মিয়ার ছোটভাই নূরে আলম, ছেলে মঈনের কাছে তাকে হস্তান্তর করে চান্দিনা থানা পুলিশ।
হাসপাতালে এক সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে তাকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সযোগে ছেলে মঈনের নারায়ণগঞ্জের গাউছিয়া এলাকার ভাড়া বাসায় পাঠানো হয়।
চান্দিনা থানার ওসি মো. সাহাবুদ্দীন খান জানান, ওই বৃদ্ধকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে ইউএনও হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। পরে ওই বৃদ্ধের ছেলে তার বাবাকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য ইউএনওর কাছে আবেদন করেন। ইউএনও ওই আবেদন থানায় পাঠালে আমরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি।
ছেলে মঈন জানান, আমার বাবা ২১ বছর আগে নিখোঁজ হন। পত্রিকায় নিউজ দেখে আমরা চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে আমার বাবাকে দেখতে পাই। আমার বাবার চিকিৎসায় এগিয়ে এসেছেন অনেকে। তাদের কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি আরও জানান, আমাদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। চাকরির সুবাদে নারায়ণগঞ্জের গাউছিয়ায় ভাড়া বাসায় থাকি। তাই বাবাকে সেখানে নিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে ছেলে মঈনের কথা কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না মহাসড়কের পাশে বৃদ্ধকে পড়ে থাকতে দেখা স্থানীয়রা। একাধিক ব্যক্তি জানান, গত ৬ অক্টোবর সকাল থেকে হুইলচেয়ারে বসে থাকাবস্থায় মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার বড়গোবিন্দপুর স্টেশনে আমরা দেখেছি ওই বৃদ্ধকে। ওই বৃদ্ধ বলেছিলেন— তার ছেলেসহ আরও দুজন তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নেওয়ার কথা বলে রাস্তার পাশে ফেলে গেছে। ওই বৃদ্ধ শুরু থেকে তার নিজের নাম ও ঠিকানা বলেছেন। কিন্তু প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হওয়ায় হুইলচেয়ারই ছিল তার ভরসা। একই স্থানে রোদে বৃষ্টিতে পড়ে থাকতে দেখে রাইহানা ইসলাম রুনা নামে এক নারী তাকে নিজের হাতে ভাত খাওয়ান এবং তার বিষয়ে প্রশাসনসহ সাংবাদিকদের খবর দেন।
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস শীল জানান, গত ১৪ অক্টোবর রাতে স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে ওই বৃদ্ধের মুখ থেকে বিস্তারিত শুনে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। ওই বৃদ্ধকে কেউ না কেউ অবশ্যই ফেলে গেছেন। যেহেতু তার ছেলে ও ছোটভাই এসেছেন, তাই আইনি প্রক্রিয়ায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।