এক বছর ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে অবশেষে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার সিংহী নোভা মারা গেছে। ১৮ বছর চার মাস বয়সি নোভা ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে খাবার গ্রহণ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছিল। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় নোভার মৃত্যু হয়েছে বলে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
এদিকে চিড়িয়াখানার দেড় যুগের বাসিন্দা নোভাকে হারিয়ে মন খারাপ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। শূন্য খাঁচাটিই এখন সিংহী নোভার স্মৃতি হয়ে আছে। এ নিয়ে কর্মকর্তাদের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মর্মস্পর্শী স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর ডাক্তার শাহাদাত হোসেন বলেন, সিংহী নোভা নানা রোগে আক্রান্ত ছিল। এতে এটি কাহিল হয়ে পড়ে। সর্বশেষ দুসপ্তাহ কিছু খায়নি। এর আগে তার স্বামী নভ মারা গিয়েছিল। স্বামীর মৃত্যুর এক বছরের মধ্যে চলে গেল নোভাও।
ডাক্তার শুভ আরও বলেন, সাধারণত সিংহের স্বাভাবিক জীবনকাল ১৫ থেকে ১৭ বছর। নভ ও নোভাকে যখন এক খাঁচায় রাখা হয়েছিল, তখন তাদের প্রজননের প্রায় শেষ সময় ছিল। এ কারণে তারা ছিল নিঃসন্তান দম্পতি। গত বছরের ১১ নভেম্বর ১৯ বছর বয়সে সিংহ নভ মারা যায়।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সিংহ নভ এবং সিংহী নোভাকে জাঁকজমকপূর্ণভাবে বিয়ে দিয়ে এক খাঁচায় রাখে জেলা প্রশাসন ও চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। তখন সিংহী নোভার বয়স ছিল ১১ বছর এবং নভ’র ১৩ বছর। ২০০৫ সালের ১৬ জুন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় সিংহ দম্পতি রাজ-লক্ষ্মীর ঘরে দুটি কন্যা সিংহ জন্ম নেয়। তাদের নাম রাখা হয় বর্ষা ও নোভা। কিছুদিন পরেই দুই বোন তাদের বাবা রাজকে হারায়। ২০০৮ সালের ১৩ ফেব্র“য়ারি মা লক্ষ্মীও মারা যায়। এরপর ১১ বছর পুরুষ সঙ্গীবিহীন অবস্থায় কাটায় বর্ষা ও নোভা। ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর প্রাণী বিনিময় প্রক্রিয়ায় রংপুর চিড়িয়াখানায় বর্ষাকে পাঠিয়ে সেখান থেকে আনা হয় প্রায় ১৩ বছর বয়সি সিংহ বাদশাহকে। চট্টগ্রামে তার নাম রাখা হয় নভ।