Logo
Logo
×

সারাদেশ

দেড় কোটি টাকার মালামালসহ বাল্কহেড নিয়ে পালানোর সময় ৬ ডাকাত আটক

Icon

গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৫৯ পিএম

দেড় কোটি টাকার মালামালসহ বাল্কহেড নিয়ে পালানোর সময় ৬ ডাকাত আটক

মেঘনা নদীর মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশ থেকে ৩ বাল্কহেড কর্মচারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দেড় কোটি টাকার মালামালসহ একটি বাল্কহেড নিয়ে পালানোর সময় ছয় ডাকাতকে আটক করেছেন স্থানীয় জেলেরা।

এ সময় অপর তিন ডাকাত কৌশলে পালিয়ে যায়। আটককৃতদের কাছ থেকে তিনটি রামদা এবং লুট করা নগদ তিন হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

আটককৃত ডাকাতরা হলেন- আব্দুল কাদির (২৪), সুজন (২৮), সাদ্দাম হোসেন ওরফে সবুজ (২১), নান্নু মিয়া (২০), শাহীন হাওলাদার (২৫) ও রুবেল মোল্লা (২৮)। তাদের বাড়ি বিভিন্ন জেলায় বলে জানা গেছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় জেলে আলী মিয়া বলেন, মেঘনা নদীর গজারিয়া অংশের বঘুরচর এলাকায় মাছ ধরছিলেন তারা। রোববার ভোরে তাদের জালের উপর দিয়ে একটি বাল্কহেড দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় কয়েকজন জেলে তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করেন কিন্তু তারা না থেমে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। জাল ছেড়ার ক্ষতিপূরণ আদায় করার জন্য কয়েকজন জেলে তাদের ট্রলার নিয়ে বাল্কহেডটিকে পেছন থেকে ধাওয়া করে।

জেলেদের ধাওয়া খেয়ে দিক পরিবর্তন করে চালক বাল্কহেডটি হোসেন্দী বড় ব্রিজ এলাকার দিকে নিয়ে যেতে থাকেন। সেখানে পানির গভীরতা কম থাকায় বাল্কহেডটি মাটিতে আটকে গেলে কয়েকজন জেলে বাল্কহেডের উপরে উঠে দেখতে পান ভেতরের কেবিন চেম্বারে তিনজন লোককে হাত-পা বেঁধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখা হয়েছে।

এ সময় তারা আশপাশের লোকজনকে খবর দিলে তারা ছয় ডাকাতকে আটক করে তিনজন বাল্কহেড শ্রমিককে উদ্ধার করেন। পরে খবর পেয়ে নৌ পুলিশ সদস্যরা এসে ৬ ডাকাত ও বাল্কহেড তাদের হেফাজতে নেয়।

বাল্কহেড মালিক হযরত আলী ফকির বলেন, মালগুলো বরগুনার জেলার কয়েকজন ব্যবসায়ীর। তার দায়িত্ব মালগুলো নির্ধারিত স্থান থেকে সংগ্রহ করে তার বাল্কহেডের মাধ্যমে বরগুনাতে মালিকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। নারায়ণগঞ্জ থেকে দেড় কোটি টাকার (তেল, আটা, চিনি) মালামাল বাল্কহেডে লোড করা হয়েছিল। আরও প্রায় ৪০-৫০ লাখ টাকার মালামাল নেওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে টাকা না দেওয়ায় তারা মাল নিতে পারছিলেন না। সেজন্য গত দুইদিন যাবত মেঘনা নদীর গজারিয়া অংশের তেতৈতলা পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় বাল্কহেড নোঙ্গর করে তারা টাকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

তিনি জানান, রোববার সকালে তারা খবর পান বাল্কহেডের স্টাফদের জিম্মি করে সঙ্ঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্র সেটি ছিনতাই করে নেওয়ার পথে স্থানীয় জনতা তাদের আটক করে। মালামাল অক্ষত রয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি গজারিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

গজারিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রাশেদুল হক বলেন, ডাকাত দল মালভর্তি একটি বাল্কহেডে নিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় জেলেরা তাদের আটক করে। খবর পাওয়ার পর আমরা সেখানে ছুটে যাই। মালামাল সব অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে। বাল্কহেড থেকে ডাকাত দলের ছয় সদস্যকে আটক করা হয়। বাকি তিনজন অন্য ট্রলার দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। হাত পা বাঁধা অবস্থায় তিন শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়। বাল্কহেড বর্তমানে আমাদের হেফাজতে রয়েছে।

বিষয়টি সম্পর্কে নৌ পুলিশের নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা বলেন, আমি ছুটিতে আছি তবে গজারিয়া নৌ পুলিশ থেকে একটি ডাকাতির তথ্য পেয়েছি। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে শুনেছি সেখানে দেড় কোটি টাকার মতো মালামাল ছিল তবে তারা কোনো চালানের কপি দেখাতে পারেননি। সব মালামাল অক্ষত রয়েছে। আটক ডাকাতদের কাছ থেকে তিনটি রামদা এবং লুট করা নগদ তিন হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা দায়ের করতে বলা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম