বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার এক্সরে বিভাগের বারান্দায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আগুন আতঙ্কে গোটা হাসপাতালের অধিকাংশ রোগী এবং স্বজন ছোটাছুটি শুরু করেন। তারা ভয়ে হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে যান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ১৫ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। এতে ওই বিভাগের একটি এসির কমপ্রেসার এবং কিছু বৈদ্যুতিক লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বরিশাল বিভাগের সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) বেলাল উদ্দিন।
এদিকে ঘটনার পিছনে কোন নাশকতা পরিকল্পনা ছিল কিনা তা তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছে শেবাচিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রোগীর স্বজন ইমাম হোসেন জানান, রোগীর সঙ্গে চারতলায় ছিলাম। হঠাৎ দেখি ধোঁয়া ছড়িয়ে পরছে। তখন আগুনের বিষয়টি বুঝতে পেরে ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে ফায়ার সার্ভিসকে জানাই। পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
আগুনের আতঙ্কে অধিকাংশ রোগী ছোটাছুটি করেছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগী জানান, আগুন নিভলেও ভয় এখনও মন থেকে যায়নি, আগুনের আতঙ্কে রয়েছি। হাসপাতালে সুস্থ হতে এসেছি। সেখানেই যদি আগুন লাগে তাহলে যাবো কোথায়? তাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বরিশাল বিভাগের সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) বেলাল উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে অধিক গুরুত্ব বিবেচনায় দুটি ইউনিট ১৫ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, বৈদ্যুতিক শকসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। তদন্ত শেষে সঠিক কারণ জানা যাবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই ঘটনায় কেউ আহত হয়নি।
তিনি বলেন, যেখানে আগুন লেগেছে সেখানে এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা হতো। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিটি রুম এবং যন্ত্র খোঁজ খবর নিয়ে দেখেছেন। তবে কোন যন্ত্রের ক্ষতি হয়নি। যেই রুমটিতে আগুন লেগেছে সেই রুমের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণের পর আমাদের ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। একটি এসি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন হাসপাতালের ওই বিভাগ ছাড়া সব স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক আছে। ঘটনার পিছনে কেউ জড়িত আছে কিনা বা নাশকতার পরিকল্পনা ছিলো কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসক ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধিদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।