
সিলেটে রানা ভুইয়ার প্রতারণার শিকার হচ্ছে তৃতীয় লিঙ্গের লোকজন। নিজের স্ত্রী-সন্তান থাকার পরও ছদ্মবেশী রানা ভুইয়া সিলেটে এসে রানী মুখার্জি সেজে স্থানীয় তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) লোকজনকে নিয়ন্ত্রণে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তার কারণে হিজড়া জনগোষ্ঠীর সদস্যরা মূল ধারায় ফিরতে পারছেন না। তাদের নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে অপরাধে জড়িয়ে রেখে অর্থ উপার্জন করছেন। এ অবস্থায় রানা ভুইয়া ওরফে রানী মুখার্জিকে সিলেট থেকে উৎখাতে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা।
রোববার সিলেট প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অর্ধশতাধিক তৃতীয় লিঙ্গ এমন দাবি জানিয়েছেন।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লিপি হিজড়া। তিনি বলেন, ‘রানা ভুইয়া ওরফে রানী মুখার্জি নামে এক ছদ্মবেশী নিজেকে গুরুমা হিজড়া দাবি করে দীর্ঘদিন ধরে সিলেটে নানা ধরনের অপকর্ম চালিয়ে আসছেন। তিনি হিজড়া ও নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গায়ে হাত তোলা ও লাঞ্ছিত করা, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, বিয়ের গাড়ি আটকিয়ে হামলা করে অর্থ আদায়, গভীর রাতে হিজড়া সাজিয়ে বিভিন্ন মানুষকে ফাঁদে ফেলা, ছেলেদের হিজড়া বানানো বা সাজানো, হিজড়াদের স্বাভাবিক জীবনে আসতে বাধা প্রদানসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত।’
রানা ভুইয়া ওরফে রানী মুখার্জি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার আফিয়ারকোনা গ্রামের জুবেদ আলীর ছেলে। বর্তমানে দক্ষিণ সুরমার খোজারখলার বাচ্চু মিয়ার বাসায় বসবাস করছে। এই ছন্দবেশী হিজড়া গুরুমা একজন পুরুষ এবং তার স্ত্রী সন্তান আছে বলে তারা দাবি করেন।
তারা বলেন, ‘প্রত্যেকটি অপরাধের সঙ্গে রানী ও তার সহযোগীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। এসব অপরাধ করে তিনি অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। একেক সময়ে একেক চরিত্র ধারণ করে অর্থ উপার্জনের মোহে উন্মাদ। তার এ ধরনের প্রতারণায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছে স্থানীয় তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আলেয়া, সুন্দরী, আদুরী, জামিলা, পায়েল, সানি, বৈশাখী, মুক্তা, বাবলী, পাখি, চাঁদনী, ডালিয়া প্রমুখ।
এ ব্যাপারে রানা ভুইয়া তার স্ত্রী-সন্তান থাকার কথা স্বীকার করে যুগান্তরকে বলেন, সিলেটে একটিও প্রকৃত হিজড়া নেই। সবগুলো লিঙ্গ পরিবর্তন করে ব্যবসা করছেন।
তিনি আরও জানান, তিনি তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে একটি মাদ্রাসা চালু করেছেন। এসব তাদের ভালো না লাগায়। এখন তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছেন। স্থানীয় তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর ব্যাপারে প্রকৃত তথ্য উপস্থাপনের জন্য তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।