গাজীপুরের শ্রীপুরে গভীর গজারি বন থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের হায়াতখারচালা ও সাবারচালা গ্রামের সীমান্তবর্তী নছুরটেক এলাকার গভীর গজারি বনের ভেতর থেকে মো. পলাশের (২১) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পলাশ উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের হেরাপটকা গ্রামের মো. মহসিনের ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন।
শ্রীপুর থানার এসআই সাদিকুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের মাথায় একাধিক কোপের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে শনিবার রাতে অজ্ঞাত খুনিরা ওই যুবককে বনের ভেতর নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। লাশটি গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। প্রথমে নিহতের পরিচয় পাওয়া যায়নি। পরে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আসাদুজ্জামান বাবু জানান, রোববার সকালে স্থানীয় কৃষক শামীম ধান খেতে সার দিতে বনের ভেতরের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় লাশ দেখতে পান। পরে তিনি বিষয়টি আশপাশের লোকদের জানান। স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়।
নিহতের মা পারুল জানান, সুমনার সঙ্গে পলাশের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুই বছর পূর্বে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাশকে আটকিয়ে সুমনার সঙ্গে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর থেকে সুমনার পরিবার চাইতো পলাশ ওই বাড়িতে ঘরজামাই থাকুক। এ নিয়ে পলাশের শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে ঝগড়া হতো। সুমনা এর আগে দুইবার পালিয়ে বাবার বাড়িতে চলে গেছে। গত ঈদুল ফিতরের পর থেকে পলাশ স্ত্রীর সঙ্গে পটকা গ্রামের নতুনপাড়ায় থাকত। প্রায় পাঁচ মাস ধরে পলাশ শ্বশুরবাড়িতে থাকে। বাবা-মার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। রোববার দুপুরে বাড়িতে পুলিশ আসলে জানতে পারি পলাশ খুন হয়েছে।
তিনি দাবি করেন- পলাশের স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ জঙ্গলে ফেলে রাখে। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
নিহতের চাচাতো ভাই মনির জানান, পলাশ শ্বশুরবাড়িতে থাকত। রোববার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক যুবকের রক্ত মাখা লাশের ছবি দেখতে পাই। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি শনিবার রাতে পলাশ খুন হয়েছে।
পলাশের শ্বশুর মেজবা উদ্দিন জানান, পলাশ দীর্ঘ দিন ধরে তাদের বাড়িতে থাকে না। তার স্ত্রী সুমনা স্থানীয় সিআরসি নামক কারখানায় চাকরি করে। পলাশ কিভাবে কোথায় খুন হয়েছে তা আমাদের জানা নেই।
শ্রীপুর থানার ওসি এএফএম নাসিম যুগান্তরকে জানান, লাশ উদ্ধারের পরপরই তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হবে। হত্যাকাণ্ডের কারণ শনাক্ত করতে কাজ করছে পুলিশ।