জিনের বাদশা সেজে প্রতারণার মাধ্যমে ভাগ্য ফেরাতে চেয়েছিলেন ভোলার বোরহানউদ্দিনের ফুলগাছিয়া গ্রামের ফখরুল ইসলাম। ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নতুন ব্যবসাও খুলে বসেছিলেন; কিন্তু প্রতারণা শিকার ব্যক্তির মামলার কারণে শেষ রক্ষা হলো না তার। সিআইডির বিছানো জালে ধরা পড়েন তারা।
স্ত্রী সহযোগীসহ সিআইডির জালে ধরা পড়ে কারাগারে ঠাঁই হচ্ছে তার। বুধবার বিকালে ঢাকার আশুলিয়া থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সিআইডি যশোরের পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- চক্রের হোতা ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ফুলগাছিয়া গ্রামের আঙ্গুর শিকদারের ছেলে ফখরুল ইসলাম (৩৫), তার স্ত্রী সুমি (৩০) ও সহযোগী রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ভূতবানা গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে আলিফ মিয়া (২০)।
যশোর শহরের কাঠ ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জানান, তিনি পাবনার কিছু ব্যবসায়ীর সঙ্গে ব্যবসা করতেন। এতে তার ৪ লাখ টাকা আটকা পড়ে যায়। ওই টাকা উঠাতে ব্যর্থ হয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। এরপর একটি বেসরকারি টেলিভিশনে টাকা উদ্ধারের সহায়তার বিজ্ঞাপন দেখে তাদের নম্বরে ফোন দেন। নির্দেশনা মতে দুই হাজার টাকাও দেন।
এরপর ওই মোবাইল থেকে ফোন করে আবুল হোসেনকে পাওনা চার লাখ টাকা উদ্ধারের পাশাপাশি জিনের মাধ্যমে আরও ১৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা অর্জনের প্রলোভন দেখান। ওই প্রলোভনে পড়ায় জিনের বাদশা প্রতারক চক্র তার কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেয়।
যখন বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তারপর আইনের আশ্রয় নেন। সর্বশেষ সিআইডি পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জিনের বাদশা প্রতারক চক্রের হোতা ফখরুল ইসলাম, তার স্ত্রীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
চক্রের হোতা ফখরুল ইসলাম জানান, কাজকর্ম হারিয়ে বেকার জীবনযাপন করছিলেন। গ্রামে তার চাচাতো ভাইয়েরা জিনের বাদশার নামে প্রতারণা ব্যবসা করে। তাদের সাহায্য নিয়ে জিনের বাদশা সেজে প্রতারণার মাধ্যমে ভাগ্য ফেরাতে চেয়েছিলেন তিনি। এরপর প্রতারণার টাকা দিয়ে নিজে ব্যবসাও খুলে বসেছিলেন তিনি; কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না, তাদের আটক হতে হয়েছে।
সিআইডি যশোরের পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, গ্রেফতারকৃতরা স্বর্ণের কলসিতে ১৩ কোটি টাকা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দিয়েছিল। মামলাটা হাতে আসার পর তারা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে প্রতারক চক্রকে আটক করতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।