ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে টিসিবির কার্ড না দিয়ে চেয়ারম্যান বকাঝকা করায় এক নারী ইউপি সদস্যের বিষপানের অভিযোগ উঠেছে। তিনি বর্তমানে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার টিসিবির পণ্য বিতরণ উপলক্ষে শুক্রবার বিকালে পরিষদে সভা করেন বোয়ালমারী উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুশা। খবর পেয়ে সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য হাসামদিয়া গ্রামের মোছা. শাহিনুর বেগম ইউনিয়ন পরিষদে যান। শাহিনুর বেগমের কার্ড না দিয়ে মিটিং শেষ করলে চেয়ারম্যানের কাছে তিনি কার্ড দাবি করেন।

এ সময় চেয়ারম্যান তাকে কার্ড না দিয়ে বকাঝকা করে পরিষদ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এ অপমান সহ্য করতে না পেরে বাড়িতে গিয়ে সন্ধ্যায় শাহিনুর বেগম বিষপান করেন। রাতেই তাকে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এমএম নাহিদ আল রাকিব বলেন, শাহিনুর বেগম হাসপাতালে এলে ওয়াশ করে ফরিদপুরে রেফার করা হয়। তিনি একসঙ্গে বিষ এবং গুল পান করেছেন। এ ধরনের বিষ দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকে।

ওই নারী সদস্যের স্বামী আলেক মাতুব্বর বলেন, আমরা গ্রাম্যভাবে চেয়ারম্যানের দল না করায় এবং সংসদ সদস্যের বরাদ্দ নিয়ে আমার স্ত্রী ওয়ার্ডের কিছু রাস্তা নির্মাণ করায় চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত। ইউনিয়ন পরিষদের কোনো সভার বিষয়ে তাকে জানানো হয় না। তবে শুক্রবার আমার স্ত্রী অন্যের মাধ্যমে খবর পেয়ে পরিষদের জরুরি সভায় উপস্থিত হন। এ সময় চেয়ারম্যান অন্য সদস্যদের মাঝে টিসিবির কার্ড বিতরণ করেন। তবে আমার স্ত্রীকে কোনো কার্ড না দিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও বেতন না দেওয়ার হুমকি দেন। সে রাগে ক্ষোভে বাড়িতে এসে আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে বিষপান করে। 

এদিকে চেয়ারম্যানের ভয়ে চিকিৎসাধীন ওই নারী সদস্য মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের অনেক বড় হাত। আমার হাতে তেমন কোনো টাকা নেই যে, তার সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকব। অতএব আমি এখন কিছু বলতে চাই না।

দাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হাসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার সঙ্গে তার কোনো বাগবিতণ্ডা হয়নি। তিনি কী কারণে বিষপান করেছেন তা আমি জানি না। তবে তিনি শুক্রবার সভা শেষে আমার অফিস কক্ষে এলে বলেছিলাম টিসিবির কার্ড লাগবে কিনা। লোক পাঠিয়ে দিলে তাদের দেওয়া হবে। কেননা তিনি এর আগে টিসিবির পণ্য তুলে বাড়ি নিয়ে গেছেন। এজন্য তাকে কার্ড দেওয়া হয়নি। তার স্বামীর সঙ্গে ঠিকমতো বনিবনা নেই। এ কারণেও বিষপান করতে পারেন।