কম দামে মরিচ বিক্রি নিয়ে সংঘর্ষ, আরও ১ সবজি বিক্রেতার মৃত্যু
বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৩, ০৭:২২ পিএম
বরিশাল নগরীর কাশিপুরে কম দামে মরিচ বিক্রি নিয়ে দ্বন্দ্বে ছুরিকাঘাতে আহত আরও এক সবজি বিক্রেতার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার একদিন পর রোববার রাত ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
শনিবার সকাল ৮টার দিকে কাশিপুর বাজারে কম দামে মরিচ বিক্রি নিয়ে বিক্রেতা সাবেক সেনা সদস্যর সঙ্গে বাজারের সবজি বিক্রেতাদের দ্বন্দ্ব হয়। এ ঘটনায় ছুরিকাঘাতে ওই দিন সবজি বিক্রেতা কামাল হোসেনের (৩৮) মৃত্যু হয়। এছাড়াও ছুরিকাঘাতে আরও ৫ জন আহত হন। এর মধ্যে গুরুতর আহত আলমগীর হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার রাত ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভাগ্নে শহিদুল ইসলাম।
মৃত আলমগীর (৪০) নগরীর ২৮নং ওয়ার্ড দিয়াপাড়া দীঘিরপাড় এলাকার তিনু মাঝির ছেলে। তিনি কাশিপুর বাজারের সবজি বিক্রেতা ছিলেন।
বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ওসি মো. হেলালউদ্দিন বলেন, ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলমগীরের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এর আগের হত্যার ঘটনায় করা মামলায় বিষয়টি সংযুক্ত হবে। নতুন করে আর কোনো মামলা হবে না। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে।
আগের মৃত্যুর ঘটনায় শনিবার রাতে এয়ারপোর্ট থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত কামাল হোসেনের স্ত্রী মাহফুজা বেগম। মামলায় ছুরিকাঘাত করা মরিচ বিক্রেতা সোহেল রানাকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
সোহেল রানা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সিংহেরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা মৃত সোনামুদ্দিন হাওলাদারের ছেলে। তিনি বরিশাল নগরীর ইছাকাঠি সড়কের ভাড়াটিয়া বাসিন্দা কাশিপুর বাজারে মুদি ও কাঁচামাল বিক্রেতা।
নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ফরিদ হোসেন বলেন, কাশিপুর বাজারের সামনে কম দামে সবজি ও কাঁচামরিচ বিক্রি করছিলেন সোহেল রানা। বাজারের ব্যবসায়ীরা এর প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে মারামারি ও ছুরিকাঘাতে ৬-৭ জন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী মো. শহিদ জানিয়েছেন, কাশিপুর বাজারের কাঁচামাল বিক্রেতারা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে কাঁচামরিচ বিক্রি করে। এ সময় সোহেল রানা বাজারের সামনে মাইকিং করে ১২০ টাকা কেজি দরে মরিচ বিক্রি করছিলেন। তখন নিহত কামালসহ আহতরা এসে ওই দামে মরিচ বিক্রি করতে নিষেধ করেন; কিন্তু সোহেল রানা রাজি হননি। এতে তাকে বাজারের সবজি বিক্রেতা কয়েকজন মিলে বেধড়কভাবে মারধর করে।
একপর্যায়ে জীবন বাঁচাতে সোহেল রানা বস্তা কাটার ছুরি দিয়ে তাদের আঘাত করেন। তার এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে নিহত কামালসহ চারজন জখম হন। তাদের হাসপাতালে নেওয়ার পর কামালকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
নিহত কামাল নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাশিপুরের সৈয়দপুর এলাকার এসকান্দার সর্দারের ছেলে।
আহত হয়েছিলেন কাশিপুরের তিনু মাঝির ছেলে আলমগীর হোসেন (৪০), তার ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫) ও অপর ভাই জয়নাল আবেদীন (৩৫) এবং একই এলাকার মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে আব্দুল মালেক (৬০)।
এ ঘটনায় আহত ছুরিকাঘাতকারী সোহেল রানা (৫০) পুলিশ প্রহরায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন।