গ্রেফতারী পরোয়ানা মাথা নিয়ে প্রকাশ্যেই ঘুরছেন ইউপি চেয়ারম্যান
মুহাম্মদ আবুল কাশেম
প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৩, ০১:৪৪ এএম
কিশোরী গৃহকর্মীকে ধর্ষণ ও বাচ্চা প্রসবের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গাজীপুরের কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার গাজীপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ পরোয়ানা জারি করেন।
জারি করা পরোয়ানায় উল্লেখ রয়েছে, গাজীপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়ের হওয়া মামলায় এ গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বিষয়টি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেন নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের পেশকার মাইন উদ্দিন কিরণ।
পলাতক আসামি মো. সাখাওয়াত হোসেন কাপাসিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও একই সঙ্গে তিনি কাপাসিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি। তার বাবা রাউৎকোনা গ্ৰামের মৃত সাহেব আলী মোক্তার মুক্তিযুদ্ধের সময় কাপাসিয়ায় আলবদর বাহিনীর সেক্রেটারি ছিলেন।
গ্রেফতারী পরোয়ানার বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএইচএম লুৎফুল কবীর জানান, অফিসিয়ালি থানায় এখনো গ্রেফতারী পরোয়ানার কাগজ আসেনি।আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে কাপাসিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগে মামলা করেন নির্যাতনের শিকার কিশোরীর বাবা।
উল্লেখ্য, এ ঘটনা নিয়ে যুগান্তরে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি সবার নজর আসে।পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টশন (পিবিআই) মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান।
মামলায় উল্লেখ রয়েছে , কিশোরী গৃহকর্মীকে স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে প্রায়ই ধর্ষণ করতেন চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন। এক পর্যায়ে কিশোরী গর্ভবতী হয়ে গেলে চেয়ারম্যান তার বাড়ির কাজের লোকের সঙ্গে জোরপূর্বক গর্ভবতী কিশোরীকে বিয়ে দেন। পরে গত বছরের ১ আগস্ট অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তরগাঁও খেয়াঘাটে এক বাসায় ভাড়া রাখেন চেয়ারম্যান। ওই বছরের ১৬ আগস্ট মেয়েটিকে কাপাসিয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বাচ্চা প্রসবের পর বাচ্চাসহ কিশোরীকে পুনরায় ভাড়া বাসায় ফেরত আনা হয়। কিন্তু এরই মধ্যে ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে সাংবাদিকরা ওই ভাড়া বাসায় ভিড় করে ও মেয়ের ভিডিও বক্তব্য নেয়। অপরাধ লুকানোর জন্য চেয়ারম্যান ২০২২ সালের ২৯ আগস্ট রাতে বাচ্চাসহ মেয়েটিকে ভাড়া বাসা থেকে অপহরণ করে। তখন অপহরণের বিষয়টি অস্বীকার করে চেয়ারম্যান জানিয়েছিলেন, ডিএনএ টেস্টে তিনি অপরাধী হলে স্ত্রী সন্তান মেনে নেবেন।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য ও সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজনের নামে থানায় জিডি ও অভিযোগ করেছিলেন।