মংলু পাগলার জমানো টাকা ফিরিয়ে দিলেন বণিক সমিতির সভাপতি মনি
মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৩, ০৭:২৩ পিএম
নওগাঁর মহাদেবপুরে মংলু নামের এক পাগলের জমানো ৬০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বাসস্ট্যান্ড বণিক সমিতির সভাপতি মো. মনিরুল হক মনি। শনিবার রাতে বাসস্ট্যান্ড বণিক সমিতির কার্যালয়ে মংলু পাগলার মৃত বড়ভাই বিশু উড়াওয়ের ছেলে মুহিত চন্দ্র উড়াও ও মংলুর আরেক ভাই সুমীর উড়াওয়ের (সমর) হাতে এ টাকা তুলে দেওয়া হয়।
মংলু উপজেলার জোয়ানপুর গ্রামের মৃত রিজা বাবুর ছেলে; যাকে মংলু পাগলা নামে মহাদেবপুরের সবাই চিনতেন। বিশেষ করে যারা মহাদেবপুর বাজার ও আশপাশের এলাকায় বসবাস করেন। তিনি গত ১৫ জুন রাতে আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৭৫ বছর। তিনি ছোট থেকেই মহাদেবপুর বাজার এলাকায় ঘুরে বেড়াতেন। বিভিন্ন সময় তার পছন্দের মানুষগুলোর কাছ থেকে ৫-১০ টাকা চেয়ে নিতেন। অপরিচিত বা অপছন্দের মানুষের কাছ থেকে কখনো টাকা বা কোনো সহযোগিতা নিতেন না।
মানুষের কাছে চেয়েচিন্তে যে টাকা পেতেন তার মধ্যে থেকে খাওয়া-দাওয়ার পর বেঁচে যাওয়া টাকাগুলো জমা রাখতেন বাসস্ট্যান্ড বণিক সমিতির সভাপতি মনিরুল হক মনির কাছে। এভাবে ১৫ বছরে তার প্রায় ৬০ হাজার টাকা জমা হয়।
মংলু পাগলার আকস্মিক মৃত্যুর খবর পেয়ে মনিরুল হক মনি খুঁজতে থাকেন মংলুর উত্তরসূরিদের। এক সময় তিনি পেয়েও যান মংলুর, ভাই ও তাদের ছেলেদের। তাদের জানান মংলুর জমাকৃত টাকার কথা। সময়ক্ষণ ঠিক করে মংলুর জমাকৃত ৬০ হাজার টাকা তুলে দেন মংলুর আপনজনদের হাতে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাসস্ট্যান্ড বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক উৎপল ঘোষ, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বিশ্বনাথ অধিকারী গোপাল, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি বরুণ মজুমদার, মহাদেবপুর প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আইনুল হোসেন, অর্থ সম্পাদক মো. মকলেছুর রহমান, সাংবাদিক আমিনুর রহমান খোকন, মো. মেহেদী হাসানসহ মংলুর আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে বাসস্ট্যান্ড বণিক সমিতির সভাপতি মো. মনিরুল হক মনি বলেন, মংলু তাকে বিশ্বাস করে প্রায় ১৫ বছর ধরে প্রতিদিনই তার কাছে ১০, ২০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্তও জমা দিতেন। তার টাকাগুলোর হিসাব রাখার জন্য আলাদা একটি খাতায় লিখে রাখা হতো। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি প্রায় ৬০ হাজার টাকা জমা করেছিলেন। মংলুর মৃত্যুর পর তার পরিবারের লোকজনের হাতে টাকাগুলো তুলে দিতে পেরে সত্যিই খুব ভালো লাগছে। মংলু পাগল হলেও একজন সৎ ও ভালো মানুষ ছিলেন।