Logo
Logo
×

সারাদেশ

জয়পুরহাটে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ৪০

Icon

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৩, ০৯:৩০ পিএম

জয়পুরহাটে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ৪০

মঙ্গলবার জয়পুরহাটে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় দুপক্ষের নেতাকর্মী ও পুলিশসহ ৪০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ উভয় দলকে ছত্রভঙ্গ করতে পাঁচ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ছয় রাউন্ড শটগানের ফাঁকাগুলি নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

দুপক্ষের ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনার পরপরই বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জেলা বিএনপির অফিসে হামলা চালিয়ে দলীয় নেতাদের ছবি ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। 

এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রাথমিক অবস্থায় ১০ থেকে ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। অপরদিকে ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি বিএনপির।

তবে পুলিশি হয়রানির আশঙ্কায় বিএনপির আহত নেতাকর্মীরা কেউ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাননি বলে জানান বিএনপি নেতারা।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে মোট ১৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় ইফাত নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

আহতরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও পুরানাপৈল ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম সৈকত, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া হোসেন রাজা, জেলা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হাসান পবন,কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ ও সার্জিল আহম্মেদ ইফাত, সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আবু কাহার, পৌর ছাত্রলীগ সদস্য তৃষাণ, জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু রায়হান উজ্জল প্রধান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মামুনুর রশিদ প্রধান, সরকারি কলেজ শাখার সদস্য সচিব পিয়াস আহমেদ পৃথিবী, শহর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক আল-আমিন, জেলা যুবদলের সদস্য রেজাহাত হোসেন রনি, জেলা যুবদলের সদস্য রাসেল তালুকদারসহ অন্যরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকালে আওয়ামী লীগ জয়পুরহাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন জেলা কার্যালয়ের সামনে বিকাল ৪টায় শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রার আয়োজন করে। সেখান থেকে শান্তি মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণের পর সাড়ে ৪টার দিকে জেলা কার্যালয়ে ফেরার পথে রেললাইনের পূর্বপাশে প্রধান সড়কে অবস্থান নেয়।

একই সময় শহরের নতুনহাট থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা স্টেশন রোড হয়ে পদযাত্রা নিয়ে তাদের পার্টি অফিসের পাশে রেলগেট এলাকায় এসে রেললাইনের পশ্চিম অংশে প্রধান সড়কে মাত্র ২০ গজ সামনে অবস্থান নেয়। তারা সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়লে ধাওয়া পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়।

সংঘর্ষে পথচারীসহ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের অন্তত ৪০ জন নেতাকর্মী ও অজ্ঞাত পথচারী আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বিএনপির জেলা কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় পুলিশ শটগানের ফাঁকা গুলি ছুড়লে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। শহরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রাশেদ মোবারক বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় হাসপাতালে ১৫ জন ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলজার হোসেন বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে পদযাত্রা শেষ করে দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। এ সময় অতর্কিতভাবে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিনা উস্কানিতে ইটপাটকেল ছুড়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। তারা লাঠিসোটা নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় পুলিশের রাবার বুলেটে ১০-১২ জনসহ ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মণ্ডল বলেন, শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা শেষে আমরা আমাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়ার সময় শোভাযাত্রার পেছনের অংশের নেতাকর্মীর ওপর বিএনপির নেতাকর্মীরা রেললাইনের পাথর ছুড়লে সংঘর্ষ হয়। এতে আমাদের অন্তত ১০-১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহেদ আল মামুন বলেন, আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ও বিএনপির পদযাত্রার শেষ সময়ে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এ সময় শটগানের ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য শহরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম