
প্রিন্ট: ০১ মার্চ ২০২৫, ১২:৫৩ এএম
চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বসতভিটার জমিদখলের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৩, ১২:৩৮ পিএম

আরও পড়ুন
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউপির চেয়ারম্যান কর্তৃক ভিটাবাড়ির জমিদখল এবং হেনস্তার শিকার হয়েছেন খলসি গ্রামের মো. আবদুল মাজেদের পরিবার। চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ভিটার বেড়া ভেঙে দেওয়ার কর্মকাণ্ডের ভিডিও করতে গেলে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে। পরিবারটি চেয়ারম্যান কর্তৃক শ্লীতাহানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই ভিটার জমিদখলের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ভিডিওতে দেখা গেছে, চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে জমিদখল করতে গেলে ভুক্তভোগী পরিবারটি সেটির ভিডিও করলে তাদের মোবাইল ছিনিয়ে নেন। একপর্যায়ে জোরপূর্বক আবদুল মাজেদের ছোট মেয়ের কাছ থেকে ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। চেয়ারম্যান বলতে থাকেন, এই ভিডিও করে কে? ফোন রাখ বলে ফোনটি ছিনিয়ে নেন। এ সময়ে অশোভন আচরণ করা হয় পরিবারটির সঙ্গে। বসতভিটা দখলের সময় পরিবারটির সদস্যরা চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি ইউনিয়নের অভিভাবক হওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছেন। এর জবাবে চেয়ারম্যান উচ্চস্বরে বলেন, হ্যাঁ হারিয়েছি। বর্তমানে আতঙ্কিত অসহায় পরিবারটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা কামনা করেছেন।
ভুক্তভোগী আবদুল মাজেদ স্থানীয় হেলাতলা আইডিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। ২০১৭ সাল থেকে তিনি অসুস্থ। তার বড় মেয়ে তাহেরা খাতুন জানিয়েছেন, ১৯৯৫ সালে খলসি গ্রামের ৩৪ শতক জমি ক্রয় করেন। তখন থেকেই তিনি এখানে শান্তিপূর্ণভাবেই বসবাসের চেষ্টা করে যাচ্ছেন; কিন্তু চারপাশের সীমানা নিয়ে বিবাদ চলার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। বেশ কয়েকবার আমিনের মাধ্যমে জমির সীমানা নির্ধারণ করা হলেও কেউ সেটা মানতে চায়নি। ফলে পরে আবারও ঝামেলা দেখা দেয়। এ সমস্যার সমাধান করার জন্যই আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বর, জমির সীমানা সংলগ্ন সব জমির মালিক ও গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তিসহ সর্বশেষ ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে আমিনের মাধ্যমে জমির সীমানা নির্ধারণ করা হয়, যা সবাই মেনেও নেয়। এ সময় ভুক্তভোগী পরিবারের প্রায় তিন শতকের মতো জমি রাস্তায় পাওনা হয়। রাস্তার অপর প্রান্তে থাকা পুকুরের পাড় ভেঙে আমাদের জমিতে চলে এসেছে। তখন আমরা জমিদখল নিলে পুরো রাস্তাই বন্ধ হয়ে যেত।
এমতাবস্থায় চেয়ারম্যান বলেন, আমরা যখন রাস্তা নির্মাণ করব তখন আপনারা আপনাদের জমিটা বর্ধিত করে নেবেন। সে অনুযায়ী আমরা রাস্তা বাধাই করার পর রাস্তাসহ আরও এক হাত জায়গা ছেড়ে দিয়ে আমরা বেড়া দিয়ে আমাদের জায়গাটা ঘিরে দিই এবং সেখানে কিছু গাছ লাগাই। রাস্তায় মাটি দেওয়ার সময় ও মেম্বর বলেন, কাজ শেষ হওয়ার পর জমিদখলে নিতে। কিন্তু দখলে নেওয়া ১০-১২ দিন পরই চেয়ারম্যান মেম্বর ও তাদের দলবল বেড়া উচ্ছেদ করে। তারা আমাদের সঙ্গে কোনো সমাধানেও যাওয়ার চেষ্টা করেনি। তাদের এ কর্মকাণ্ডের প্রমাণ রেকর্ড করতে গেলে তারা পার্সোনাল ফোন ও কেড়ে নেয়। অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করে। যেটি একজন জনপ্রতিনিধির নিকট কাম্য নয়। এখন যেহেতু এটা আমাদের কেনা জমি, তাই আমরা জমির ম্যাপ ও দলিল অনুযায়ী যথাযথ সীমানা নির্ধারণ করে প্রাচীর দিতে চাই। বর্তমানে আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এই ঘটনার জন্য পরিবারটি সাতক্ষীরার এসপি, কলারোয়া থানার ওসির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন অত্যন্ত ক্ষমতাধর। পরিবারটির বসতভিটার বেড়া ভেঙে দিলে কেউ এগিয়ে আসতে সাহস পাননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেনের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে কলারোয়া থানার শেখ মুনীর-উল গিয়াস বলেন, আমরা এখনো পর্যন্ত এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভিডিও লিংক দেখতে এখানে ক্লিক করুন।