হাউসফুল মণিহার, ‘প্রিয়তমা’য় মজেছে দর্শক
ইন্দ্রজিৎ রায়, যশোর ব্যুরো
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৩, ০৭:৩০ পিএম
দেশের বৃহত্তম সিনেমা হল হিসেবে পরিচিত যশোরের মণিহার। এক সময় ঢাকার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই হলে সিনেমা মুক্তি দেওয়া হতো। অতীতে অনেক ব্যবসা সফল ছবি মুক্তি পেয়েছে হলটিতে। এক সময় জমজমাট ছিল সিনেমার ব্যবসা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিনেমা হলের দুর্দিন যাচ্ছে। এমন দুর্দিনের মধ্যে আশা জাগিয়েছে সদ্য মুক্তি পাওয়া সিনেমা প্রিয়তমা। ঈদের দিন থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২০টি প্রদর্শনী হয়েছে এই সিনেমা হলে। প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষ সিনেমাটি দেখেছেন।
মণিহারে টিকিটের দাম ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। সেই হিসাবে মাত্র চারদিনেই প্রায় ১১ লক্ষাধিক টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। যদিও মোট কত টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে, সেটা নির্দিষ্ট করে বলতে চাননি হল কর্তৃপক্ষ।
প্রিয়তমা রোমান্টিক অ্যাকশন ধাঁচের মৌলিক গল্পের ছবি। দারুণ গল্প, অভিনয় আর প্রিয়তমার শেষ পরিণতি দেখে অঝোরে কেঁদেছেন অনেক দর্শক। কেউ আবার নিজের জীবনের অতীতকেও খুঁজে পেয়েছেন এই সিনেমায়। আবার কেউ খুঁজতে এসেছেন প্রিয়তমার প্রিয়তমাকে।
নড়াইল থেকে পরিবার নিয়ে মণিহার হলে আসা রোকেয়া বেগম জানান, দীর্ঘ ১২ বছর পর সিনেমা হলে এলাম। বাংলাদেশে সিনেমার প্রেক্ষাপট বদলেছে। একটা সময় ছিল পরিবার নিয়ে অবসর সময় কাটানোর জন্য মানুষ সিনেমা হলে আসতেন। তবে মাঝে অনেকটা সময় রুচিহীন ডায়লগ আর গল্পে সয়লাব হয়েছিল দেশীয় সিনেমা। সেই জায়গা থেকে পুনরায় ফিরে এসেছে বাংলা ছায়াছবি।
কলেজপড়ুয়া লিজা খাতুন বলেন, হলে সিনেমা দেখার পরিবেশ না থাকায় সাহস করে কখনো আসা হয়নি। এবারই প্রথম হলে সিনেমা দেখলাম। শাকিব খান ও ইধিকা পালের অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছি।
সবুজ সুলতান নামে আরেক দর্শক বলেন, নিজের জীবনের অতীত দেখতে পেয়েছেন প্রিয়তমা সিনেমায়। মনে ধরেছে সিনেমার একটি ডায়ালগ ‘তোর থেকে হাজার গুণ সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করে দেখাবো’ ।
আরেক দর্শক নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, ‘সিনেমার শেষ দৃশ্যটি অনেক কষ্টের। দর্শকদের চোখে জল চলে আসে। খুব কেঁদেছি।’
সাব্বির হোসেন নামে এক দর্শক বলেন, শাকিব খান যে অভিনয় করে; সেটা থেকে এই সিনেমা ব্যতিক্রম। সিনেমা দেখে অনেক ভালো লাগলো। শাকিবের যে লুক; এই সিনেমাতে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আগের সিনেমা থেকে তার এই সিনেমাতে অভিনয় অনেক ভালো হয়েছে। খুব সুন্দর ছিল সিনেমাটা। বলা যায় অসাধারণ। খুব ইমোশনাল সিনেমা। এই রকম সিনেমা আমরা প্রত্যাশা করি। শেষের দৃশ্যগুলো সত্যি মারাত্মক ছিল।
মণিহার সিনেমা হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মিঠু জানান, শাকিব খানের ছবি সবসময় ব্যবসা সফল হয়। তবে প্রিয়তমা হয়তো রেকর্ড ভাঙতে চলেছে। ঈদে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমা এখন পর্যন্ত প্রায় সবগুলো শো হাউজফুল চলেছে। দেশে যে বাংলা সিনেমার দুর্দিন চলছে; তার ভিতরে এই সিনেমাটা ব্যবসা সফল। পরানের ও হাওয়া সিনেমার পর ব্যবসা সফল সিনেমা প্রিয়তমা। প্রিয়তমা দর্শকদের চাহিদা যতদিন থাকবে, ততদিন প্রদর্শিত হবে।