কুড়িগ্রামে পানিবন্দি ২০ হাজার মানুষ
আহসান হাবীব নীলু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৩, ১০:২৪ পিএম
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাটেশ্বরী সোনাহাট রেল সেতু পয়েন্টে দুধকুমার নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও জেলার ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থেকে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। নাগেশ্বরী উপজেলা বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের তেলিয়ানীপাড়ায় দুধকুমার নদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২৫০ মিটার ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ১৬টি নদ-নদীর প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাধিক চরাঞ্চলে ৭ থেকে ৮ লাখ মানুষের বসবাস। পাহাড়ি ঢল আর টানা ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদীতে পানি বাড়ায় নদী অববাহিকার চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এসব এলাকার মানুষ নৌকা-ভেলা করে চলাচল করছে। এছাড়াও পানিতে তলিয়ে গেছে সবজি ও আমনের চারাসহ পাট।
বামনডাঙ্গা ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আবেদ আলী জানান, মঙ্গলবার বিকাল থেকে তেলিয়ানীতে তার বাড়ির পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর দিয়ে দুধকুমারের পানি লোকালয়ে ঢুকতে থাকে। ক্রমেই মাটি ক্ষয়ে স্রোতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। বড় বড় গর্ত হয়ে তলিয়ে যেতে থাকে বাঁধে থাকা জিওব্যাগ। এক সময় স্রোতের তীব্রতায় ভেঙে যায় প্রায় ২৫০ মিটার বাঁধ।
যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, তার ইউনিয়নে বন্যার পানিতে কম পক্ষে ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুহিন মিয়া জানান, বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৯ মিলিমিটার এবং পরবর্তী ৬ ঘণ্টায় আরও ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে নদ-নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ২২ ও ২৩ জুন প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদি বন্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই বলে জানান তিনি। বাধঁ ভাঙ্গার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বন্যার পানিতে হাজার হাজার মানষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ জানান, বন্যা মোকাবেলার সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ৫৪১ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১০ লাখ ২১ হাজার টাকা ও শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে। যেখানে প্রয়োজন হবে তাৎক্ষণিকভাবে বিতরণ করা হবে। বন্যাদুর্গতদের পাশে থাকার জন্য সব ইউএনও এবং ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।