Logo
Logo
×

সারাদেশ

‘শেখ হাসিনা নৌকা দিয়েছেন, আবার ইলেকশন কিসের?’

Icon

আকতার ফারুক শাহিন, বরিশাল

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৩, ১০:৫৭ পিএম

‘শেখ হাসিনা নৌকা দিয়েছেন, আবার ইলেকশন কিসের?’

‘শেখ হাসিনা নৌকা দিয়েছেন, আবার ইলেকশন কিসের? ইলেকশন যদি হয়, বুঝে নেবেন ইলেকশন কাহাকে বলে। প্রয়োজনে সাইকেল ভেঙেচুরে কচা নদীতে ফেলে দেওয়া হবে।’

এই বক্তব্য পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মহারাজের। কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান গাজীর পক্ষে প্রচারের সভায় দেওয়া তার এমন বক্তব্যের পর নৌকার প্রার্থী ছাড়া আর কেউ মনোনয়ন দাখিল করেনি। রোববার ছিল মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন।

এই ইউনিয়নে নৌকার বিরুদ্ধে বাই সাইকেল নিয়ে প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপির দল জাতীয় পার্টির (জেপি) নেতা সিকদার দেলোয়ার হোসেনের। তিনি ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান। কাউখালী এমপি মঞ্জুর নির্বাচনি এলাকার আওতাধীন উপজেলা এটি। মহিউদ্দিন মহারাজের দেওয়া বক্তব্য মুহূর্তে ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এরপর আর মনোনয়ন দাখিল করেননি সিকদার দেলোয়ার।

কাউখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে শনিবার গভীর রাতে নির্বাচনি সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম আবদুস সহিদ।

প্রধান অতিথি ছিলেন মহিউদ্দিন মহারাজ। তিনি বলেন, সভায় অনেক বক্তা বলেছেন তারা কাউখালী থেকে সাইকেল বিতাড়িত করতে চান। শুধু ইউনিয়ন পরিষদ নয়, আগামী উপজেলা পরিষদের নির্বাচনেও সাইকেলকে বিতাড়িত করতে হবে। নৌকাকে বিজয়ী করে সাইকেল ভেঙেচুরে কচা নদীতে ফেলে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নৌকা দিয়েছেন, তারপর আবার ইলেকশন কিসের?

জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপির উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ভোট নিয়ে এমপি হবেন। আবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ঠেকানোর জন্য সাইকেল দেবেন। এর বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ। এটা কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও নেছারাবাদের আওয়ামী লীগ আর মেনে নেবে না।

জেপির প্রার্থী সিকদার দেলোয়ার হোসেনকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে মহিউদ্দিন মহারাজ বলেন, শিয়ালকাঠিতে নৌকাকে জয় এনে দিতে এবং সাইকেল বিতাড়িত করতে যা কিছু করতে হয় আমি করব। সাইকেলের প্রার্থী অত্যন্ত ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ। এই সাইকেলের রোষানলে পড়ে তিনি (সিকদার) যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন। সিকদার যেন দয়া করে বাড়ি চলে যান।

সিকদার দেলোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। উপজেলা জেপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মিঞা বলেন, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু তো আওয়ামী লীগের জোটে আছেন। তাই আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্য অপ্রত্যাশিত মনে হয়েছে। বিষয়টি দলের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি।

জানতে চাইলে মহিউদ্দিন মহারাজ বলেন, আমি কাউকে মনোনয়ন দাখিল করতে নিষেধ করিনি। রাজনৈতিক সভায় নেতাকর্মীকে উজ্জীবিত করতে অনেক ধরনের কথাই বলতে হয়। আমি কেবল বলেছি যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেখানে নৌকার প্রার্থী দিয়েছেন, সেখানে অন্য সবার উচিত তাকে সম্মান করা। তাছাড়া কাউখালী-ভান্ডারিয়া-নেছারাবাদের এমপি আওয়ামী লীগ জোটের। এখানে নৌকার কোনো প্রার্থী দেওয়া হয় না। তিনি আওয়ামী লীগের ভোটে এমপি হন। যেখানে আওয়ামী লীগ তাকে এমপি বানায় সেখানে নৌকার সঙ্গে তিনি লড়তে যান কেন? সাহস থাকলে আলাদাভাবে নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করে তিনি তার জনপ্রিয়তা প্রমাণ করুক। আমার কাছে আমার দল আমার নেত্রী সবার ওপরে।
 
শিয়ালকাঠি ইউপি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল রোববার। ২৫ জুন প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ। আগামী ১৭ জুলাই ইভিএমে ভোট গ্রহণ হবে। চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান একা মনোনয়ন দাখিল করায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন বলে মোটামুটি নিশ্চিত। সেক্ষেত্রে সাধারণ এবং সংরক্ষিত আসনের সদস্য নির্বাচনে ভোট দেবেন ভোটাররা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম