Logo
Logo
×

সারাদেশ

কৃষিজমির মাটি বিক্রি, হুমকিতে খাদ্য উৎপাদন

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, নবাবগঞ্জ

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৩, ১১:০৫ পিএম

কৃষিজমির মাটি বিক্রি, হুমকিতে খাদ্য উৎপাদন

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের শান্তিনগর এলাকায় নির্বিচারে ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন তথা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে ফেরদৌস ফকির নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকদের সমন্বয়ে সিন্ডিকেট করে চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের মাটি বিক্রির জমজমাট ব্যবসা। ওই এলাকায় কৃষিজমি কাটা মাটি ও টপসয়েল বিক্রি করার ফলে হুমকি মুখে পড়ছে কৃষি খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা। অন্যদিকে মাহেন্দ্রযোগে মাটি বহন করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রির ফলে নষ্ট হচ্ছে স্থানীয় গ্রামীণ কাঁচাপাকা সড়ক।

জানা গেছে, উপজেলার নয়নশ্রীতে স্থানীয় এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির ছত্রছায়ায় শান্তিনগরে এই ফসলি জমির মাটি কাটা ও পুকুর খননের কাজ চলছে পুরোদমে। জমির টপসয়েল নির্বিচারে কেটে বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে। আর এসব মাটি বহনের ফলে নয়নশ্রী ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়ক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষ তথা পথচারীদের। সড়কের ধুলোবালিতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী। এ বিষয়ে মাটি বিক্রেতা ফেরদৌস ফকিরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

স্থানীয়দের দাবি, কিছুদিন আগে নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জেল জরিমানা করে শান্তি নগরের এই মাটি ব্যবসায়ী চক্রকে; কিন্তু কিছু দিন বন্ধ থাকার পর, গত এক সপ্তাহ ধরে আবারো কৃষিজমির মাটি কাটা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে চলছে, জমিতে পুকুর খননের কাজ। শ্রেণি পরিবর্তন না করে কৃষি জমি খনন করে পুকুর তৈরি করে রাত দিন মাটি বিক্রি করছেন এ চক্রটি। 

সরেজমিন দেখা যায়, ফেরদৌস ফকির তার নিজের ফসলি জমির মাটি ভেকু দিয়ে কেটে মাহেন্দ্রযোগে বহন করেন এবং গ্রামীণ কাঁচাপাকা সড়ক নষ্ট করে বিভিন্ন স্থানে মাটি বিক্রি করছেন। এর ফলে স্থানীয় কাঁচাপাকা সড়কগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। 

শান্তিনগর এলাকার কামাল হোসেন (৫০) বলেন, ফসলি জমির মাটি কেটে ভাটায় দিচ্ছেন ও নয়নশ্রী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বিক্রি করছেন ফেরদৌস ফকির। একটু বৃষ্টি হলেই কাঁচা সড়ক দিয়ে হাঁটা যায় না। স্কুল ও মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছে। 
শান্তিনগর গ্রামের মালেকা বেগম (৬০) বলেন, বিলপল্লী গ্রামের গেন্ধু ফকিরের ছেলে ফেরদৌস ফকির তার জমির মাটি গত চার দিন ধরে রাত-দিন কেটে বিক্রি করছে। মাটি বহনকারী মাহেন্দ্র আমাদের রাস্তা নষ্ট করে ফেলছে। বাধা দিলে তার লোকজন আমাদের মারধর করতে আসে। 

নবাবগঞ্জ থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, মাটি বিক্রেতাদের বিষয়ে কোনো ছাড় নেই। কৃষিজমি নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। এ কাজের সঙ্গে কেউ জড়িত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী মো. মতিউর রহমান বলেন, নবাবগঞ্জের কোনো স্থানে কৃষিজমির মাটি বিক্রি করা যাবে না। মাটি কাটা বন্ধের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ইতোপূর্বে অনেক মাটি ব্যবসায়ীকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে ও মাটি বিক্রির কাজে ব্যবহার করা ট্রাক ও মাহেন্দ্র আটক করা হয়েছে। রাতের আঁধারে যারা গোপনে মাটি বিক্রির ব্যবসা করে, তাদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে উপজেলা প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম