
প্রিন্ট: ০১ মার্চ ২০২৫, ০৮:০৩ পিএম
মানিকগঞ্জে কোরবানি ঈদের জন্য প্রস্তুত ৭২ হাজারেরও বেশি গবাদিপশু

মতিউর রহমান, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৩, ১০:৪১ এএম

আরও পড়ুন
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম বিজরী। চারদিকে দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ। তার মাঝ খানে ১৩২ শতাংশ জমির ওপর ফার্মসহ প্রায় ৩০ বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠেছে গ্রামবাংলা নামের ডেইরি ফার্ম। প্রবাস ফেরত স্থানীয় সোনা মিয়া প্রায় তিন বছর ধরে এই ডেইরি ফার্মের উদ্যোক্তা।
সোনার বাংলা ডেইরি ফার্মে এখন ২৬টি হৃষ্টপুষ্ট গরু রয়েছে। এ ছাড়া ১৯টি মহিষও রয়েছে ফার্মে। সোনা মিয়ার ফার্মে যেসব গরু রয়েছে যার এক একটি গরুর সর্বনিম্ন বাজার দর রয়েছে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা। এ ছাড়া একটি ক্রস জাতের দেশি লাল রঙের গরু রয়েছে, যার ওজন ৩০ মণ। ঈদে এটির দাম হাঁকবেন ৮-৯ লাখ টাকা। সোনা মিয়া তার তার ডেইরি ফার্মের ৪৫টি গরু-মহিষ কম করে হলেও কোটি টাকার বেশি মূল্যে বিক্রির আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
সোনা মিয়ার মতো জেলার মানিকগঞ্জে কোরবানি ঈদ সামনে রেখে ৩৮ হাজারেরও বেশি মোটাতাজাকরণ পশু প্রস্তুত রেখেছেন খামারি মালিকরা।
দেশি খাবারের ওপর নির্ভর করে পশু কোরবানির উপযুক্ত করে তৈরির কাজ করছেন তারা। কয়েক বছর ধরে মানিকগঞ্জ জেলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় গরু খামারিরা গরু মোটাতাজা করছেন। ঈদ মৌসুমে বিক্রি করার উপযুক্ত করে এসব পশু মোটাতাজা করে তোলেন তারা। সম্পূর্ণ নিজেদের তত্ত্বাবধানে তৈরি করা এসব গবাদিপশু ঈদবাজারে তোলা হয়।
খামারিরা বলছেন, জেলার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলায়ও এসব গরু বিক্রয় করা হয়।
গরু খামারিরা জানান, ভারতীয় গরু না এলে এবার দেশি গরু বিক্রি করে ভালো মুনাফা অর্জন করতে পারবেন তারা।
গ্রামবাংলা ডেইরি ফার্মের মালিক সোনা মিয়া
মানিকগঞ্জ সদরের ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের বিজরী গ্রামের গ্রামবাংলা ডেইরি ফার্মের মালিক সোনা মিয়া বলেন, এখানে প্রধানত সাহিয়াল, সিন্দি ও জার্সি জাতীয় গরু পালন করা হয়। গরু মোটাতাজা করতে আমরা কোনো প্রক্রিয়াজাতকরণ খাবার ব্যবহার করি না। স্বাভাবিক যে খাবার সেটা ব্যবহার করি। তাজা ঘাস, ভুসি প্রধান খাদ্য হিসেবে গরুকে খাওয়ানো হয়।
তিনি বলেন, এবার আমাদের খামারে ২৬টি গরু ও ১৭টি মহিষ আছে। ভারতীয় গরু না এলে কোরবানির ঈদবাজারে ভালো দাম পাব। গত বছরের তুলনায় এবার বেশি লাভ হবে বলে তিনি মনে করছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, জেলার ৭টি উপজেলায় ছোট-বড় মিলে ৯ হাজার ৬৬৯ গরুর খামার রয়েছে। এসব খামারে ৩৮ হাজারেরও বেশি ষাঁড়সহ ৭২ হাজার ৯৪৬টি গবাদিপশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এর সঙ্গে ১৫ হাজার ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে গরু ও ছাগল পালনের মাধ্যমে আরও প্রায় ৫০ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। আশা করি জেলার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলায়ও ঢাকার গাবতলী, সিলেট, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলায় যাবে গবাদিপশু।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, জেলায় মোট খামারের সংখ্যা ৯ হাজার ৬৬৯টি। এর মধ্যে সাটুরিয়া উপজেলায় দুই হাজার ৪২টি, সিংগাইরে ২ হাজার, ঘিওরে ১২৬২টি, দৌলতপুরে এক হাজার ১৫৭টি গবাদিপশুর খামার রয়েছে। এ ছাড়া সদর উপজেলায় রয়েছে এক হাজার ৩০টি, শিবালয়ে এক হাজার ৮৮টি ও হরিরামপুর উপজেলায় রয়েছে এক হাজার ৯০টি গবাদিপশুর ফার্ম। এসব খামারে যেসব গরু পালন হচ্ছে তাতে জেলার চাহিদা মিটিয়ে সাড়ে ৩৭ হাজারটি গবাদিপশু অন্যান্য জেলায় বিক্রি হবে।