রাজশাহীতে সিটিটিসির হাতে দুই অনলাইন জুয়াড়ি আটক
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৩, ০৩:৩৬ পিএম
অনলাইন জুয়া ও ক্রিকেট বেটিং পরিচালনাসহ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা আনা ও টাকা পাচারের অভিযোগে রাজশাহী থেকে দুজনকে আটক করেছেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশানাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।
গত ২৪ মে গভীর রাতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে আমিনুল ইসলাম (৩২) ও দুরুল হোদাকে (৩৪) আটক করে নিয়ে যায় সিটিটিসি ঢাকার একটি অভিযানিক দল। গোদাগাড়ী থানা পুলিশ সিটিটিসিকে অভিযানে সহায়তা করে। গোদাগাড়ীর ওসি কামরুল ইসলাম আমিনুল ও দুরুল হোদাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে আটক দুই ব্যক্তিকে ঢাকায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকায় অনলাইন জুয়া, ক্রিকেট বেটিং ও হুন্ডি পাচারে জড়িত অর্ধশত ব্যক্তির নাম পেয়েছে সিটিটিসি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সিটিটিসির একটি সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে আটক দুজনের বিরুদ্ধে ডিএমপির রমনা থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। আটক আমিনুল ইসলাম ও দুরুল হোদার দেওয়া তথ্যমতে, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে সক্রিয় অনলাইন জুয়া ও ক্রিকেট বেটিং ছাড়াও সীমান্তে তৎপর মাদক পাচারকারীদের শনাক্তের কাজ করা হচ্ছে। শিগগিরই বাকিদের ধরতে অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশের এ বিশেষ সংস্থাটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আটক দুজনেই গোদাগাড়ীতে অনলাইন ব্যাংকিং ছাড়াও বিকাশ ও নগদের ব্যবসা করেন। তাদের বিরুদ্ধে অনলাইন জুয়া, ক্রিকেট বেটিং এবং বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে ভারত ও দুবাইসহ বিভিন্ন দেশ থেকে টাকা আনা ও পাচারে জড়িত বলে প্রাথমিক অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া ভারত থেকে সীমান্ত পথে আসা মাদকের টাকাও তারা বিভিন্ন উপায়ে নিয়মিতভাবে ভারতে পাঠাতেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সিটিটিসি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবেন বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রটি জানিয়েছে।
আমিনুল ইসলাম রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌর এলাকার হনুমন্তনগর এলাকার নুরুল ইসলাম ও দুরুল হোদা পার্শ্ববর্তী শ্রীমন্তপুর মহল্লার মৃত ওয়াকিল বিশ্বাসের ছেলে। গোদাগাড়ী পৌর এলাকার ডাকবাংলাসংলগ্ন হাটপাড়া এলাকায় তাদের বিকাশ ও নগদের দুটি দোকান রয়েছে। সিটিটিসি অস্বাভাবিক লেনদেনের বিষয়টি ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে শনাক্ত করেন। এসব দোকান থেকে তারা মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত প্রবাসী শ্রমিকদের হুন্ডির মাধ্যমে নিয়ে আসা টাকা পরিবারের কাছে পরিশোধ করছিলেন অনেক দিন ধরে। এ ছাড়া ভারত থেকে আসা হেরোইন ও ফেনসিডিলের টাকাও বিভিন্ন মাধ্যমে ভারতীয় পাচারকারীদের কাছে পরিশোধ করতেন। এর বাইরে আইপিএল ক্রিকেট বেটিং ও অনলাইন জুয়াতেও তারা টাকা পাচার করতেন দুবাই ও ভারতে।
গোদাগাড়ী থানা পুলিশ সূত্র জানায়, গত ২৪ মে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একটি দল গোদাগাড়ী থানা পুলিশের সহায়তায় আমিনুল ও দুরুল হোদাকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করেন। সিটিটিসির দলটি আটক দুইজনকে সঙ্গে নিয়ে গোদাগাড়ী ছাড়াও পাশ্ববর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে আরও সন্দেহভাজন কয়েকজনের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু তাদের ধরতে পারেননি।
সিটিটিসি ঢাকার অভিযানিক দলের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, আমিনুল ইসলাম ও দুরুল হোদাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। শিঘ্রই এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের কাছে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে। তারা দুজনই মানিলন্ডারিং অপরাধে জড়িত বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে সিটিটিসি নিশ্চিত হয়েছেন।