কাউন্সিলর জসিমের বিরুদ্ধে এবার লুটপাট ও চাঁদাবাজির মামলা
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৩, ১০:১১ পিএম
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম ওরফে জসিমের বিরুদ্ধে এবার ভ্রাম্যমাণ এক দোকানিকে মারধরের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১টার দিকে নগরীর আকবরশাহ থানায় মারধরের শিকার অপু প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে ওই দোকানিকে মারধর, দোকানের মালামাল লুটপাট ও চাঁদাবাজির অভিযোগ করা হয়েছে। মামলায় কাউন্সিলর জসিমকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া পাঁচ থেকে ছয়জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আকবরশাহ থানার ওসি ওয়ালি উদ্দিন আকবর যুগান্তরকে বলেন, এক ভ্রাম্যমাণ দোকানিকে মারধর ও তার দোকানের মালামাল ও নগদ টাকা লুটপাটসহ চাঁদাবাজির অভিযোগে কাউন্সিলর জসিমের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর ২২। এ নিয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো গত বুধবার বিকালে নগরীর আকবরশাহ থানাধীন পূর্ব ফিরোজশাহ এলাকার এইচ ব্লক মোড়ে পণ্য বিক্রি করতে শুরু করেন অপু প্রধান। বিকাল পাঁচটার দিকে কাউন্সিলর গিয়ে তাকে বলতে থাকেন- তুই নাকি লটারি দিয়েছিস? এই কথা বলেই এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন ওই দোকানিকে।
এরপর কাউন্সিলর বলেন, কার পারমিশন নিয়ে আমার এলাকায় ব্যবসা করতেছস। আমার এলাকায় ব্যবসা করতে হলে আমার অনুমতি লাগবে। হাদিয়া/চাঁদা ব্যতীত কোনো ব্যবসা করা যাবে না। এলাকার সব ব্যবসায়ী আমাকে মাসোহারা দিয়ে ব্যবসা করে, তুইও দিবি।
পরে ডিউটিরত পুলিশ গিয়ে ওই দোকানিকে উদ্ধার করে। এ সময় কাউন্সিলর ও তার লোকজন অপু প্রধানের ক্যাশে থাকা টাকা-পয়সা নিয়ে যায়। দোকানের মালামাল লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে বলে উল্লেখ করা হয়। মারধরের এ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম যুগান্তরকে বলেন, আমার এলাকায় জুয়ার আসর চালানোর কারণে এক ব্যক্তিকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছিলাম। আমি নিজে বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে চেয়েছিলাম; কিন্তু পুলিশ আমার মামলা না নিয়ে ওই জুয়াড়ির মামলা নিয়েছে। থানা-পুলিশের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এলাকার বিভিন্ন স্থানে জুয়াসহ বিভিন্ন অপকর্ম চলছে। এসব বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।
কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক। তিনি পাহাড় কাটাসহ একাধিক মামলার আসামি। সর্বশেষ গত ১১ এপ্রিল কাউন্সিলর জসিমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়। আকবরশাহ থানাধীন বেলতলী ঘোনা এলাকায় পাহাড় কাটার সময় মাটিচাপা পড়ে একজন নিহতের ঘটনায় ওই মামলা করা হয়।
এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি পাহাড় কাটার স্থান পরিদর্শনে গেলে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ার অভিযোগে কাউন্সিলর জসিমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।