গাজীপুর সিটি নির্বাচন: বৃষ্টিতেও বিরামহীন প্রচারণা
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৩, ১১:০২ পিএম
গাজীপুর সিটি করপোরেশন (গাসিক) নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী নির্ধারিত প্রচার-প্রচারণার দশম দিন আজ। নিয়মানুযায়ী প্রার্থীরা প্রচারণার সময় পাবেন আর মাত্র পাঁচ দিন।
এদিকে বুধ ও বৃহস্পতিবার গত দুই দিনের বৃষ্টিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের লাখ লাখ পোস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। প্রার্থীদের প্রচারণাতেও বিঘ্ন ঘটছে। তবে বৃহস্পতিবার বৃষ্টি উপেক্ষা করেই চলে প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের বিরামহীন প্রচারণা।
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান বৃহস্পতিবার কোথাও গণসংযোগ করেননি। বেলা সোয়া ১১টার দিকে এই প্রার্থীর মিডিয়া বা আইটি কো-অর্ডিনেটর অ্যাডভোকেট আনোয়ার সাদত জানান, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খানের আজকে কোনো গণসংযোগ নেই।
এদিকে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে মহানগরের কোনাবাড়ি ও কাশিমপুর এলাকায় প্রচারণা করেন। তার সঙ্গে ছিলেন ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। তাদের ওই এলাকায় ছাতা মাথায় গণসংযোগ করতে দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, জায়েদা এবং তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম যেখানে যাচ্ছেন সেখানেই তাদের দেখে শত শত মানুষ ছুটে এসে ভিড় জমাচ্ছেন।
এ সময় কোনাবাড়ি ফ্লাইওভারের নিচে সড়কে জড়ো হওয়া উৎসুক জনতার উদ্দেশ্যে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার মা জায়েদা খাতুন এখানে টেবিল ঘড়ি নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। আমার সবচাইতে ভরসা হচ্ছে এখানকার ১২ লাখ ভোটার; আপনারা সজাগ থাকবেন কোনো নেতারা যাতে আপনাদের ভোট চুরি করতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, আমার এবং মায়ের প্রতিবাদ হচ্ছে একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে; আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নয়। যিনি শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন।
জাহাঙ্গীর আলমের অভিযোগ তাকে দল, মেয়র থেকে বহিষ্কার এবং দুদকের তলব পর্যন্ত সব ষড়যন্ত্রের পেছনে আপনার (আজমত উল্লা) হাত রয়েছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান বলেন, অপকর্ম করেছে সে (জাহাঙ্গীর) নিজে। এর দায়ভার নিতে হবে তাকেই। অযথা অন্যকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। তাকে বহিষ্কার কি আমি করেছি? বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আজমত উল্লা খান আরও বলেন, আর তার দুর্নীতি নিয়ে যে কথাবার্তা; আমি তো কম বলেছি। বিভিন্ন সংবাদপত্রে তার দুর্নীতির ফিরিস্তি বের হয়েছে। এটাতো গাজীপুরবাসী সবাই জানে। তার দুর্নীতির বিষয় নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নাগরিকরা সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে রিট পিটিশন ফাইল করেছেন। হাইকোর্ট সেগুলোকে তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং তার দুর্নীতির ব্যাপারগুলো অত্যন্ত পরিষ্কার।
জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী সাবেক সচিব এমএম নিয়াজ উদ্দিন শহরের দক্ষিণ ছায়াবিথী গাজীপুর সেন্ট্রাল পাবলিক কলেজের হল রুমে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ইশতেহার ঘোষণা করেন।
পরে তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সঙ্গে দেখা করতে ঢাকার উদ্দেশে গাজীপুর ত্যাগ করেন।
হাতি প্রতীকে স্বতন্ত্র মেয়রপ্রাথী সরকার শাহনূর ইসলাম রনি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টঙ্গীর দেওড়া এবং সন্ধ্যার পর থেকে মহানগরের কাউলতি, সালনা এলাকায় গণসংযোগ করেছেন।
এ সময় তিনি বলেন, নির্বাচন করতে গিয়ে ছোটখাটো অনেক সমস্যা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রেখে ওই ছোটখাটো সমস্যাগুলোকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। চেষ্টা করছি ২৫ তারিখের নির্বাচনে সাধারণ মানুষের আস্থা যেন ফিরে আসে। আমরা আগামী ২৫ তারিখ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখব এবং আগামী ২৫ তারিখেই প্রমাণ হবে এ নির্বাচন কমিশন কতটুকু লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় রাখতে পারে।