কলেজছাত্রী হত্যার প্রধান আসামি সেই গৃহশিক্ষক যেভাবে গ্রেফতার
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ মে ২০২৩, ০১:৩৮ পিএম
গাজীপুরের সালনায় কলেজছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা এবং নিহতের মা ও তিন বোনকে মারাত্মকভাবে জখম করার ঘটনায় প্রধান আসামি গৃহশিক্ষক মো. সাইদুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বুধবার রাতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, বহুল আলোচিত গাজীপুরে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় রাবেয়া আক্তার নামে এক কলেজছাত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে গৃ্হশিক্ষক সাইদুল। বাধা দিতে গেলে এ ঘটনায় তার মা বিলকিস বেগম ও ছোট বোন খাদিজাকে গুরুতর আহত করেন। এ ঘটনায় আসামি সাইদুল ইসলামকে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারের পর সাইদুল র্যাবকে জানিয়েছে, ভিকটিমকে হত্যার পূর্বপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ৭ মে ২০২৩ তারিখ বিকালে স্থানীয় বাজার থেকে ৬৫০ টাকা দিয়ে গরু জবাই করার একটি ছুরি ক্রয় করে। পর দিন ভিকটিমের বাসায় গিয়ে তার রুমে ঢুকে ধারালো ছুরি দিয়ে মাথায়, গলায়, হাতে এবং পায়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এ সময় ভিকটিমের চিৎকারে তার মা ও দুই বোন দৌড়ে তার ঘরে গিয়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে গ্রেফতার ব্যক্তি ছুরি দিয়ে তাদেরও এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্র জানায়, রাবেয়া ২০২০ সালে জয়দেবপুরের একটি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পাস করে। পরে গাজীপুরের চৌরাস্তার একটি কলেজে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত ছিল। পড়ালেখার পাশাপাশি স্থানীয় একটি বিউটি প্রোডাক্টস অনলাইন শপে চাকরি করত। এ ছাড়া ভিকটিম উচ্চ শিক্ষাগ্রহণের উদ্দেশ্যে দেশের বাহিরে যাওয়ার জন্য কিছু দিন আগে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
অন্যদিকে গৃহশিক্ষক সাইদুল চট্টগ্রামের একটি মাদ্রাসা থেকে দাওরা পাশ করেন। তিনি গাজীপুরের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করার পাশাপাশি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করতেন এবং এলাকার বিভিন্ন বাসায় গিয়ে প্রাইভেট পড়াত। তিনি দুই মাস আগে দুটি চাকরিই ছেড়ে দেয়। ঘটনার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য তিনি নিজের চেহারা পরিবর্তন করে টাঙ্গাইলের ভূঞাঁপুরে তার এক বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনে যান। পরে আত্মগোপনে থাকাকালে র্যাব তাকে গ্রেফতার হয়।
এর আগে ৮ মে রাতে মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই কলেজছাত্রীর মা ও বোন আহত হয়েছেন। নিহত কলেজছাত্রীর নাম রাবেয়া আক্তার (২৩)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে। এ ঘটনায় তার মা বিলকিস বেগম ও ছোট বোন খাদিজাকে গুরুতর আহতাবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।