শেরপুরের ঝিনাইগাতী সীমান্তে গত ৫ মে শুক্রবার দিবাগত রাতে বৈদ্যুতিক ফাঁদে বন্যহাতি হত্যার ঘটনায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা করা হয়েছে। বন বিভাগ ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মকরুল ইসলাম আকন্দ বাদী হয়ে সোমবার তিনজনের বিরুদ্ধে ঝিনাইগাতী থানায় এ মামলাটি করেন।
বন্যহাতি মৃত্যুর ঘটনায় বিগত ৫২ বছরের মধ্যে শেরপুর জেলায় এটি দ্বিতীয় হত্যা মামলা বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
মামলায় উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নের ঘাগড়া মোল্লাপাড়া গ্রামের আশরাফ আলীর ছেলে মো. নুহু মিয়ার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও দুইজনকে আসামি করা হয়েছে।
স্বাধীনতার পর গত ৫২ বছরে এ সীমান্তে প্রায় অর্ধশত হাতির মৃত্যু হলেও কোনো মামলা করেনি বন বিভাগ। সর্বপ্রথম গত ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার বালিঝুড়ি রেঞ্জে ৪ জনকে আসামি করে একটি হাতি হত্যার মামলা দায়ের করা হয়।
রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দ জানান, প্রাথমিকভাবে ময়নাতদন্তে মৃত হাতির গায়ে জিআই তারের পোড়া দাগের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল আলম ভূঁইয়া জানান, মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।
বন বিভাগ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে একদল বন্যহাতি ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড়ের সীমান্ত এলাকায় প্রবেশ করেছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে সব সময় পাহারা দেওয়া হচ্ছে যাতে বন্যহাতি ও মানুষের কোনো ক্ষতি না হয়। কিন্তু গত ৫ মে দিবাগত রাতে ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের পশ্চিম বাকাকুড়া এলাকায় একটি বন্যহাতির মরদেহ পড়ে আছে- এমন সংবাদ পেয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেখানে যান। পরে শনিবার সকালে তারা মরা বন্যহাতিটি উদ্ধার করেন।
মামলার এজাহারনামীয় আসামি মো. নুহু মিয়ার বোরো ধান খেতে সংযোগ দেওয়া বৈদ্যুতিক জিআই তারের সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বন্যহাতিটি মারা যায় বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হন বন কর্মকর্তারা।
জেলা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্য কর্মকর্তা সুমন কুমার সরকার বলেন, এটি নিয়ে বন্যহাতি হত্যার ঘটনায় শেরপুর জেলায় দুটি মামলা করা হলো।