অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৩, ১১:১০ পিএম
জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক সহকারী কমিশনার (এসি) এবিএম শাহদাত হোসেন মজুমদার ও তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুইটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি এই দম্পতি ৪৫ লাখ ৩৪ হাজার ৩২৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অপরাধ করেছেন। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১-এর সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক মামলা দুটি করেন।
রোববার রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক নাজমুচ্ছায়াদাত।
মামলার এজাহারে বলা হয়- শাহাদাত হোসেন সার্জেন্ট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সেখান থেকে পেট্রোল ইন্সপেক্টর (পিআই) এবং সর্বশেষ সহকারী কমিশনার (এসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর দীর্ঘ চাকরি জীবন শেষ করে অবসরে যান।
অভিযোগে বলা হয়- সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। এতে তিনি ২ কোটি ১৬ লাখ ৫৯ হাজার ৯৩৬ টাকার স্থাবর ও ১০ লাখ ৮৬ হাজার ৮০ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ২ কোটি ২৭ লাখ ৪৬ হাজার ১৬ টাকার সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। কিন্তু যাচাইকালে দেখা যায়, তার নামে ২ কোটি ২৪ লাখ ৩২ হাজার ৪৫৮ টাকার স্থাবর ও ২১ লাখ ৪৬ হাজার ৮০ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ২ কোটি ৪৫ লাখ ৭৮ হাজার ৫৩৮ টাকার সম্পদ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে তিনি দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১৮ লাখ ৩২ হাজার ৫২২ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য অসৎ উদ্দেশ্যে গোপন করেছেন। সম্পদ বিবরণী যাচাইয়ে আরও দেখা যায়, ৫ তলা মার্কেট নির্মাণে শাহাদাৎ হোসেন ব্যয় প্রদর্শন করেন ৭৫ লাখ ৯৮ হাজার ৯৬০ টাকা। কিন্তু গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীর পরিমাপে (সিভিল) ৮৬ লাখ ৪৬ হাজার ৯৭২ টাকা নির্মাণ ব্যয় পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে তিনি ১০ লাখ ৪৮ হাজার ১২ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের মূল্য কম প্রদর্শন করেন। আয়কর নথি অনুযায়ী শাহাদাতের হাতে ৯ লাখ ৪ হাজার ২৯০ টাকা ও ব্যাংকে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৭১০ টাকাসহ মোট ১০ লাখ ৬০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু সম্পদ বিবরণীর অস্থাবর কলামে হাতে ও নগদে কোনো সম্পদ থাকার ঘোষণা প্রদান করেননি তিনি। গ্রহণযোগ্য আয়ের চেয়ে ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ২৮৭ টাকার বেশি সম্পদের মালিক শাহাদাৎ হোসেন। জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে এটি অসঙ্গতিপূর্ণ।
অন্যদিকে শাহাদাতের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার এজহারে বলা হয়, শাহাদাতের মতো তার স্ত্রীও ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। সেটি যাচাই শেষে দেখা যায়, রাজিয়া সুলতানা ২৭ লাখ ১ হাজার ৮০৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। পাশাপাশি ৭৫ লাখ ২৬ হাজার ৪৪৮ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে তার। এসব সম্পদের তিনি গ্রহণযোগ্য কোনো উৎস দেখাতে পারেননি। নিজেকে ব্যবসায়ী পরিচয় দিলেও এর স্বপক্ষে তিনি কোনো ট্রেড লাইসেন্স বা অন্য কোনো রেকর্ডপত্র উপস্থাপন করতে পারেননি।
নাজমুচ্ছায়াদাত যুগান্তরকে বলেন, সাবেক একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে মামলা করা হয়েছে।