রেলিং ভাঙলেও শুরু হচ্ছে না সেতুর কাজ, ভোগান্তিতে পথচারীরা
মো. মুজাহিদুল ইসলাম, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ মে ২০২৩, ০২:২৪ পিএম
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বেত্রবতী নদীর ওপর নির্মিত পুরোনো সেতুটি ভেঙে নতুন করে সেতুটি নির্মানের উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে রেলিং ভেঙে ফেলা হলেও নির্মাণ কাজ এখনো শুরু হয়নি। তবে গত কয়েক মাস ধরে ঝুঁকি নিয়ে এ সেতুটির ওপর দিয়ে প্রতিনিয়ত চলছে হাজার হাজার ভারি যানবাহন ও জনসাধারণ। ফলে যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে স্থানীয় জনসাধারণ।
সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসদরের বেত্রাবতী নদীর ওপর সেতুটির অবস্থান। কলারোয়া উপজেলার ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে বেত্রাবতী। নদীর পূর্ব পাশে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড। পশ্চিম পাশে ছয়টি ইউনিয়ন, উপজেলা সদর ও পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ড। নদীর দুই পাশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছে কলারোয়া বাজার এলাকার সেতুটি।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় কলারোয়া বাজার এলাকায় বেত্রাবতী নদীর ওপরের সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ৪৮ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থের সেতুটির নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয় ছয় কোটি ৪৮ লাখ টাকা। কাজটি পায় মোজাহার এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ১৪ এপ্রিল সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কাজটি শেষ হওয়ার কথা ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর।
ঝুকিপূর্ণ ব্রীজের বিষয়ে কলারোয়া পাবলিক ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক কামাল রেজা বলেন, সেতুর নির্মাণ কবে শুরু হবে, তার কোনো ঠিক নেই। অথচ গত বছরের এপ্রিলে সেতুর এক পাশের সম্পূর্ণ এবং অন্যপাশের কিছুটা রেলিং ভেঙে ফেলা হয়েছে। ভাঙা রেলিংয়ের এ সেতু দিয়ে মানুষ ও গাড়ি যাতায়াত করছে ঝুঁকি নিয়ে। যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বেত্রাবতী নদীর পশ্চিম পাশের ছয়টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডসহ কেশবপুর, মনিরামপুর ও তালা উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন কলারোয়া বাজার এলাকার ওই সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করে। প্রতিদিন রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স,ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক গাড়ি, পণ্যবাহী ট্রাকসহ হাজার চার থেকে পাঁচ হাজার প্রাইভেটকার,মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল ও অন্যান্য গাড়ি চলাচল করে।
এ বিষয়ে কলারোয়া নাগরিক কমিটির অ্যাডভোকেট কাজী আব্দুল্লাহ আল হাবীব বলেন, প্রতিদিন ভোর থেকে হাজারো মানুষ ও শিক্ষার্থী সেতু পার হন। কয়েক মাস ধরে নদীর ওপর সেতুর রেলিং ভেঙে রাখা হয়েছে। ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। অনতিবিলম্বে সেতুটির কাজ শুরু করার জন্য তিনি উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবি রাখেন।
সওজের সাতক্ষীরা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালের ৬ এপ্রিল নদীর দুই পাশের ১ একর ৭৬ শতক জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছিল, ওই সেতুর পাশ দিয়ে সাময়িকভাবে চলাচল করার জন্য বেইলি সেতু করার জন্য। সেটি করার পর রেলিঙের কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়। কিন্তু জমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতায় কাজ শুরু করা যায়নি। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে আমরা ঝুকিপূর্ণ ব্রীজটির কাজ শুরু করতে পারব।
স্থানীয় জটিলতার কারণে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ করা যায়নি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির। তিনি বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষ করে সওজের কাছে জমি হস্তান্তর করতে পারবেন।