‘অর্থের বিনিময়ে ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল পরিবর্তন করেছেন পুলিশ সদস্য’
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৪৭ পিএম
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হওয়ায় ধর্ষণ মামলার আসামি সাবেক পুলিশ সদস্য বরকত ওরফে বরকত উল্লাহর (৬৫) মুক্তি মিলেছে। তবে তার পাল্টা মামলার ওয়ারেন্টমূলে গ্রেফতার হয়েছেন ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী (১৯)।
শনিবার দুপুরে পুলিশ পিতৃ পরিচয়হীন ১০ মাস বয়সি সন্তানসহ ওই তরুণীকে বগুড়া জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী ও তার পরিবার দৃঢ়তার সঙ্গে দাবি করেন, সাবেক পুলিশ সদস্য বরকত উল্লাহ ওই সন্তানের বাবা। অর্থের বিনিময়ে ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল পরিবর্তন করেছেন। তারা এ ব্যাপারে সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে সহযোগিতার আহবান জানিয়েছেন।
তবে বরকত উল্লাহ অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেছেন, এটা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
সারিয়াকান্দি থানার ওসি রাজেশ কুমার চক্রবর্তী জানান, তিনি মামলাটি সম্পর্কে অবগত নন, কোর্টের ওয়েরেন্টমূলে শুক্রবার ওই তরুণীকে গ্রেফতার ও শনিবার আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার বাগবেড় কালিতলা গ্রামের দরিদ্র জেলে পরিবারের তরুণী একই গ্রামের মৃত জুলকদর প্রামানিক ওরফে শলো প্রামানিকের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য বরকত উল্লাহর বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতেন। তিনি ২০২১ সালে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। তখন তিনি বরকত উল্লাহকে তার অনাগত সন্তানের বাবা দাবি করেন। মেনে না নিলে তিনি আদালতে বরকত উল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
পরে বরকত উল্লাহ বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা ও তার বাড়ির ঝিয়ের অনাগত সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন জানান। আদালত ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন মঞ্জুর ও বরকত উল্লাহকে বগুড়া জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
গত বছরের জুনে ওই তরুণী ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। ৫ জুলাই ডিএনএ ল্যাবের পরীক্ষায় ফলাফলে প্রকাশ করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, বরকত উল্লাহর সঙ্গে ওই তরুণীর সন্তানের ডিএনএ’র কোনো মিল নেই। পরবর্তীতে পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে আদালত থেকে বরকত উল্লাহ মুক্তিলাভ করেন।
এদিকে বরকত উল্লাহ তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় গত বছরের ১ ডিসেম্বর বগুড়ার প্রথম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বাদী ওই তরুণী, তার বাবা, মা ও দুই সাক্ষীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৭ ধারায় পাল্টা মামলা করেন। বিচারক আশিকুল খবির মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে সারিয়াকান্দি থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
ওসি রাজেশ কুমার চক্রবর্তী জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলার ওয়ারেন্টমূলে শুক্রবার বিকালে ১০ মাসের সন্তানসহ ওই তরুণীকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।