বগুড়ায় ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত অন্তত ৮
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৩, ০৩:৫০ পিএম
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে (শজিমেক) আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টার এ সংঘর্ষে দুপক্ষের অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। ছাত্রাবাসের নিচতলায় অন্তত পাঁচটি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে।
সদর থানার ওসি নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের নিজের পক্ষে টানাকে কেন্দ্র করে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ৪-৫ জন সামান্য আহত হয়েছেন। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সভার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। দুপুর পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি; ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা জানান, ছাত্রলীগ শজিমেক শাখা আগে তাদের ইউনিট ছিল। গত ২-৩ বছর ধরে কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে। তিনি জানান, নতুন শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ পক্ষে নিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বিরোধের জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে শুনেছেন।
আহতরা হলেন— বগুড়া শজিমেক ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আসিফ পক্ষের ধ্রুব, অনিক, শুভ ও হৃদয় এবং সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন রনি পক্ষের ইমতিয়াজ, রেজা, ফুয়াদ ও অমিও। এরা শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বগুড়া শজিমেকের ছাত্রাবাসের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারসহ নানা কারণে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আসিফ ও সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন রনির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে।
২০২৩ সালে ৩২নং ব্যাচে সুযোগ পাওয়া ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হতে ক্যাম্পাসে এসেছেন। তাদের নিজেদের পক্ষে নিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ৩১ ব্যাচের অনুসারিদের মাঝে বুধবার সন্ধ্যা থেকে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর জের ধরে রাত ১০টার দিকে দুপক্ষের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি শুরু হয়। পরে দুপক্ষের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। মারপিটে দুপক্ষের চারজন করে আটজন আহত হন।
সংঘর্ষের সময় ছাত্রাবাসের নিচতলায় অন্তত পাঁচটি কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
বগুড়া শজিমেক শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন রনি জানান, সভাপতি আসিফপক্ষের নেতাকর্মীরা প্রথমে তার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। পরে শিক্ষকরা এসে দুপক্ষকে নিয়ে মীমাংসা করে দেন। তিনি দাবি করেন, জুনিয়রদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে তার চার কর্মী আহত হয়েছেন। তবে ঘটনার সময় তিনি অন্যত্র ছিলেন।
সভাপতি আতিকুর রহমান আসিফ বলেন, জুনিয়র শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসার পর তাদের থাকা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। তবে সাধারণ সম্পাদক রনির অনুসারিরা আমার কর্মীদের ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছেন। এতে তার চার নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গুরুতর তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি দাবি করেন, ঘটনার সময় ক্যাম্পাসে ছিলেন না।
বগুড়া ছিলিমপুর মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার ও নতুন শিক্ষার্থীদের নিজের পক্ষে ভেড়াতে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের অনুসারিদের মধ্যে সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে পাঁচ জন হাসপাতালে ভর্র্তি হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কেউ মামলা করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।