Logo
Logo
×

সারাদেশ

১২ বছর পর যেভাবে বাবাকে ফিরে পেলেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান

Icon

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৪৮ পিএম

১২ বছর পর যেভাবে বাবাকে ফিরে পেলেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান

মানসিক ভারসাম্যহীন যতিন্দ্রনাথ ওরফে যতিন (৮৫)। ১২ বছর আগে একদিন স্বজনদের অজান্তে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এরপর তিনি আর ফেরেননি। হারিয়ে যাওয়া যতিনকে খুঁজতে থাকেন সন্তান-স্বজনরা।

সম্প্রতি তার স্বজনরা জানতে পারেন, ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের রায়নগর গ্রামের একটি মন্দিরে আছেন তিনি। এরপর তাকে ফিরিয়ে আনতে যতিনের মেয়ে ধামইরহাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাবিনা এক্কা বিজিবির সহযোগিতা চান। অবশেষে বিজিবির সহায়তায় বাবাকে ফিরে পেলেন সাবিনা এক্কা।

মঙ্গলবার বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) পত্নীতলা ব্যাটালিয়ন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

যতিন্দ্রনাথ উপজেলার আগ্রাদিগুন বাসিন্দা। সোমবার মধ্যরাতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী-বিএসএফের প্রতিনিধি দল যতিনকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেন। পরে যতিনকে তার মেয়ে ধামইরহাট উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস সাবিনা এক্কার কাছে হস্তান্তর করে বিজিবি।

বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, যতিন্দ্রনাথ মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে ১২ বছর আগে নিজ বাড়ি থেকে হারিয়ে যান। সম্প্রতি তার মেয়ে ধামইরহাট উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাবিনা এক্কা জানতে পারেন, তার বাবা ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট শহরের কাছে সীমান্তবর্তী রায়নগর গ্রামে একটি মন্দিরে আছেন। পরে তিনি বাবাকে ফিরে পেতে বিজিবির পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের সহযোগিতা চান।

বিষয়টি জানার পর ১৪ বিজিবির (পত্নীতলা ব্যাটালিয়ন) অধিনায়ক লে. কর্নেল হামিদ উদ্দিন ভারতের ১৬৪ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্টের কাছে যতিন্দ্রনাথকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য মানবিক সহযোগিতা কামনা করেন। সেই মানবিক আবেদনে সাড়া দিয়ে সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সীমান্ত পিলার ২৬০-৭-এস এলাকা দিয়ে বিএসএফ-১৬৪ ব্যাটালিয়নের আওতাধীন ডাংগী বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা ১৪ বিজিবির বস্তাবর বিওপির (সীমান্ত চৌকি) সদস্যদের মাধ্যমে যতিন্দ্রনাথকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন। বর্তমানে যতিন ধামইরহাট উপজেলা সদরে তার মেয়ে সাবিনা এক্কার বাসায় অবস্থান করছেন।

যতিনের মেয়ে সাবিনা এক্কা বলেন, ২০১০ সালের দিকে বাবার মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। বাবাকে সুস্থ করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসক দেখিয়েছিলাম। তার চিকিৎসা চলছিল। এক দিন আমাদের অজান্তে বাবা বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। তিনি আর বাড়ি ফেরে না আসায় তাকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেছি। তখন মা বেঁচে ছিল। অনেক দিন পরেও বাবা ফিরে না আসায় ধরেই নিয়েছিলাম বাবা হয়তো বেঁচে নেই। আমরা তিন ভাই-বোন ও মা বাবার জন্য অনেক কান্নাকাটি করেছি। ১০-১২ দিন আগে আমাদের এলাকার এক লোক ভারতে তার আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফিরে এসে আমাকে জানান তারা বাবাকে ভারতের বালুরঘাট এলাকায় একটা মন্দিরে দেখেছেন। বাবার ছবিও তিনি তুলে আনেন।

তিনি আরও বলেন, বাবার সন্ধান পাওয়ার পর বাবাকে ফিরিয়ে আনার জন্য গত ২১ ফেব্রুয়ারি বিজিবি পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের কাছে আবেদন করি। মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় বিজিবির সহায়তায় অবশেষে বাবাকে ফিরে পেয়েছি। দীর্ঘ এক যুগ পর বাবাকে খুঁজে পাব তা কখনো কল্পনা করিনি। কতটা খুশি হয়েছি তা বলে বুঝাতে পারব না। মা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম