প্রতীকী ছবি
গাজীপুরে একটি অপমৃত্যু মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বের হয়ে আসে হত্যার রহস্য। গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সদস্যরা দীর্ঘ ১০ মাস তদন্ত করে এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেন।
মহানগরীর কাশিমপুরের এনায়েতপুরে এলাকার দুলালের বাড়ির ভাড়াটে প্রতিবেশী যুবক হামিদুল ইসলাম ওরফে রবিউলকে (২০) হত্যার অভিযোগে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া থানার চাকামহিয়া এলাকার আ. বারেক হাওলাদারের ছেলে সোহেল হাওলাদার (২৭), বগুড়া সোনাতলা থানার পাঠানপাড়া এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে রতন মিয়া (২৫) ও একই এলাকার মৃত ছামেদ আলীর ছেলে ইসরাফিলকে (৪০) গ্রেফতার করে পিবিআই। গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করেছে।
গ্রেফতার হওয়া আসামিদের বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআইয়ের এসআই সজিবুল হাসান জানান, আসামি ইসরাফিল, রতন, সোহেল ও ভিকটিম রবিউল কাশিমপুরস্থ পূর্ব এনায়েতপুর এলাকায় একই বাড়িতে পাশাপাশি কক্ষে সপরিবারে বসবাস করত।
রবিউল আসামি ইসরাফিলের বিবাহিত কন্যা টিয়াকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করত। বিষয়টি জানাজানি হলে দুই পরিবারের মধ্যে বাদানুবাদ হয়। ইসরাফিল নিষেধ করা সত্ত্বেও রবিউল টিয়াকে উত্যক্ত করা থেকে নিবৃত না হওয়ায় মেয়ের সংসারে অশান্তির কথা ভেবে ইসরাফিল প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
একপর্যায়ে আসামি সোহেল, ইসরাফিল, রতন ও অন্যান্য সহযোগী আসামিরা মিলে ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে স্থানীয় দোকানের পাশে বসে পরিকল্পনা করে।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, স্থানীয় কাঁচাবাজারের একটি দোকান থেকে রশি কিনে আনে। রবিউল প্রতি রাত ১১/১২টার দিকে অটো রিকশার গ্যারেজের ভেতরে ওয়াইফাই ব্যবহার করে গেমস্ খেলে এবং কথা বলে। এ সুযোগে গ্রেফতারকৃতরা পরিকল্পনা অনুযায়ী রাত অনুমান ১২টার দিকে অটো গ্যারেজে গিয়ে রবিউলকে গলায় রশি পেঁচিয়ে ধরে মারপিট করলে একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়ে।
পরে আসামিরা রবিউলকে গ্যারেজের আঁড়ায় রশি বেঁধে ঝুঁলিয়ে রেখে পালিয়ে যায়।
পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
পরদিন নিহতের মা হামিদা খাতুন বাদী হয়ে কাশিমপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা করেন। ময়নাতদন্তে হত্যার আলামত আসলে হত্যা মামলা করা হয়।
প্রথমে পুলিশ এ মামলা তদন্তে কোনো আসামিকে শনাক্ত করতে পারেনি। ২০২১ সালের ২১ জুন আদালত পিবিআইকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেন।
পিবিআই দীর্ঘ ১০ মাস তদন্ত শেষে ওই তিন আসামিকে গত ২০ ফেব্রুয়ারি কাশিমপুর এনায়েতপুর থেকে গ্রেফতার করে। ২১ ফেব্রুয়ারি তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। অপমৃত্যু থেকে খুনের রহস্য উদঘাটন করে পিবিআই।