মুহূর্তেই অজস্র হাতের আলোর পরশে জ্বলে ওঠে লাখ দীপশিখা। আলোর পথে চলার দৃপ্ত শপথ নিয়ে নড়াইলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশ উদযাপনে ভাষা শহিদদের স্মরণে প্রজ্জ্বলিত হয় লাখো মঙ্গল দীপশিখা।
এ সময় ভাষা দিবসের ৭২তম বার্ষিকীতে ৭২টি রঙিন ফানুস ওড়ানো হয়। এ ছিল এক চোখ ধাঁধানো দৃশ্য। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় শহরের ৬ একর আয়তনের বিশাল শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে (কুরিরডোব মাঠ) এ আয়োজন করা হয়।
সূর্য ডোবার মুহূর্তে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু, পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা, নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর রবিউল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোসা. সাদিরা খাতুন, একুশ উদযাপন পর্ষদের সদস্য সচিব ও বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব কচি খন্দকার, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মলয় কুন্ডু ও সাধারণ সম্পাদক শরফুল আলম লিটু প্রমুখ বিশিষ্ট জনেরা মোমবাতি জ্বেলে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের উদ্বোধন করেন।
সঙ্গে সঙ্গেই অন্ধকার ছাপিয়ে বাহারি ডিজাইনের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে বিশাল শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম। শহিদ মিনার, রফিক, শফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ, বর্ণমালা ও বিভিন্ন ধরনের আল্পনা ছাড়াও গ্রাম বাংলার নানান ঐতিহ্য তুলে ধরা হয় মোমবাতির আলোয়।
সন্ধ্যার আগে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনে কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক অংশগ্রহণ করেন। এ সময় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের মধ্য দিয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের গণসঙ্গীত শুরু হয়।
বেলা গড়াতেই উৎসবের আমেজে মানুষের ঢল নামে সেখানে। নান্দনিক এ অনুষ্ঠানটি জেলা ও জেলার বাইরের হাজার হাজার দর্শক উপভোগ করেন। প্রজ্জ্বলিত মোমের মায়াবী আলো-আঁধারীতে সৃষ্টি হয় এক অন্য রকম আবহ।
এ সময় স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় গণসঙ্গীত ক্ষণিকের জন্য মোহিত করে তোলে দর্শক-শ্রোতাদের। অভূতপূর্ব এক অনুভূতি ছুঁয়ে যায় সবাইকে। নান্দনিক এ অনুষ্ঠানটি আনুমানিক ২৫-৩০ হাজার দর্শক উপভোগ করেন।
ভাষা শহিদদের স্মরণে ১৯৯৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ব্যতিক্রমী এ আয়োজন শুরু হয়। প্রথমবার নড়াইলের সুলতান মঞ্চ চত্বরসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১০ হাজার মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।