Logo
Logo
×

সারাদেশ

ইন্টার্ন চিকিৎসকের হাত-পা ভাঙলেন কারা, শনাক্তে ব্যর্থ কমিটি

Icon

যশোর ব্যুরো

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:১৫ পিএম

ইন্টার্ন চিকিৎসকের হাত-পা ভাঙলেন কারা, শনাক্তে ব্যর্থ কমিটি

যশোর মেডিকেল কলেজের (যমেক) ইন্টার্ন চিকিৎসক জাকির হোসেনকে পিটিয়ে হাত ও দুই পা ভেঙে দেওয়ায় ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়েছে। তবে কারা হাত ও পা ভেঙে দিয়েছে, তা শনাক্তে ব্যর্থ হয়েছে তদন্ত কমিটি।

কলেজ প্রশাসনের গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি মঙ্গলবার অধ্যক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে বুধবার কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়।

তদন্ত কমিটি দাবি করেছে, ঘটনা সত্য হলেও অভিযুক্তদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় কেউ সাক্ষী দিতে রাজি হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, কলেজ কর্তৃপক্ষ  ঘটনার প্রথম থেকেই দায়সারা আচরণ করেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে উদাসীন। কলেজের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের অপেক্ষার অজুহাতে থানায় মামলা গ্রহণ করা হয়নি। সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেয়া হলো দায়সারাভাবে। যদিও বাদী বাধ্য হয়েই ইতোমধ্যে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

এ বিষয়ে যশোর মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মহিদুর রহমান বলেন, তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা উল্লেখ করা হলেও অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়নি। কমিটি অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা উল্লেখ করেছে, এ ঘটনায় কোনো সাক্ষী পাওয়া যায়নি। কেউ সাক্ষী দিতে রাজি হয়নি। বাদী যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তারা অস্বীকার করেছেন।

তিনি আরও বলেন, বুধবার একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা হয়েছে। অভিযুক্তরা শনাক্ত হয়নি, এজন্য অধিকতর তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলাম; কিন্তু একাডেমিক কাউন্সিল কমিটি না করার মতো দিয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে আদালতের রায়ের আলোকেই পরবর্তীতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। সিসি ক্যামেরায় স্থাপন করা হবে। মাদক সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠায় মামলার অভিযুক্ত ও বাদী সবার ডোপ টেস্ট করা হবে।

জানা যায়, গত ৩১ জানুয়ারি যশোর মেডিকেল কলেজের (যমেক) ইন্টার্ন চিকিৎসক জাকির হোসেনকে পিটিয়ে হাত ও দুই পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনা ঘটে ছাত্রাবাসের ১০৫ নম্বর কক্ষে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত দিলে পুলিশ মামলা গ্রহণ না করায় ঘটনার ৯ দিন পর ৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলা হয়।

মামলায় সাত মেডিকেল ছাত্র ও ইন্টার্ন চিকিৎসককে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন- যশোর মেডিকেল কলেজের চতুর্থ ব্যাচের ছাত্র শামীম হোসেন, পঞ্চম ব্যাচের ছাত্র আবদুর রহমান আকাশ, ষষ্ঠ ব্যাচের ছাত্র মেহেদী হাসান লিয়ন, সপ্তম ব্যাচের ছাত্র রাসেল, নবম ব্যাচের ছাত্র শাকিব আহমেদ তনিম, সৌম্য সাহা ও দশম ব্যাচের ছাত্র তন্ময় সরকার।

মামলার মামলার এজাহারে জাকির হোসেন উল্লেখ করেন, আসামিরা প্রায় জাকির হোসেনের পাশের রুমে মাদক সেবন ও হৈ-চৈ করতো। এতে পড়াশুনার অসুবিধা হওয়ায় জাকির হোসেন প্রতিবাদ করায় তাকে খুন জখমের হুমকি দিয়েছিলো আসামিরা। গত ৩১ জানুয়ারি ১০৪ নম্বর কক্ষে আসামিরা গাঁজা সেবন করে হৈ-চৈ করছিলেন। এ সময় জাকির তাদের হৈ-চৈ করতে নিষেধ করেছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাত পৌনে ৯টার দিকে জাকির হোসেনের রুমে এসে রাসেলের নির্দেশে অন্যরা হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে হত্যাচেষ্টা করে। তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, কাগজপত্র ও চাবি নিয়ে যায়।

জাকিরের চিৎকারে আশপাশের রুমের আবাসিক ছাত্ররা এসে তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনার পর জাকিরের স্বজনেরা কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। থানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি গ্রহণ না করায় তিনি আদালতে এ মামলা করেছিলেন।

এ ঘটনায় কলেজ প্রশাসন সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নুর কুতুউল আলমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা থাকলেও কমিটি ১২ দিন পর মঙ্গলবার প্রতিবেদন জমা দেন। সময় বাড়িয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেও অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে পারেনি তদন্ত কমিটি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম