সিরাজগঞ্জে ৩০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী দইয়ের মেলা
বেলকুচি-চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০২:৫৪ পিএম
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সরস্বতী পূঁজা উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী ৩০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী দইয়ের মেলাকে ঘিরে ইতোমধ্যে এলাকায় সাজসাজ রব পড়েছে ।
মেলা উপলক্ষ্যে বুধবার বিকাল থেকে নামিদামি ঘোষদের দই আসার মধ্য দিয়ে তাড়াশের প্রায় তিন শত বছরের ঐতিহ্যবাহী দইয়ের মেলা শুরু হয়েছে। দিনব্যাপী মেলায় দইসহ রসনাবিলাসী খাবার ঝুড়ি, মুড়ি, মুড়কি, চিড়া, মোয়া, বাতাসা, কদমা, খেজুর গুড়সহ বাহারি সব খাবার বিকিকিনি হচ্ছে। এ দই মেলা নিয়ে রযেছে নানা গল্প কাহিনী।
দই মেলা বিষয়ে কথা তাড়াশ সনাতন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও তাড়াশ প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রভাষক সনাতন দাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তাড়াশের তৎকালীন জমিদার বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর প্রথম দই মেলার প্রচলন করেছিলেন। জনশ্রুতি আছে জমিদার রাজা রায় বাহাদুর দই ও মিষ্টান্ন পছন্দ করতেন। জমিদারবাড়িতে আসা অতিথিদের আপ্যায়নে এ অঞ্চলে ঘোষদের তৈরি দই পরিবেশন করা হতো। আর সে থেকেই জমিদারবাড়ির সম্মুখে রশিকলাল রায় মন্দিরের পার্শ্বের মাঠে সরস্বতী পূঁজা উপলক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী দই মেলা বসাতেন। সেই থেকে প্রতিবছর শীত মৌসুমের মাঘ মাসে শ্রী পঞ্চমী তিথিতে দই মেলায় পার্শ্ববর্তী জেলা বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর থেকে ঘোষেরা দই এনে মেলায় পসরা বসিয়ে বিকিকিনি করে থাকেন।
মেলায় আসা এ অঞ্চলের দইয়ের স্বাদের কারণে নামেরও ভিন্নতা রয়েছে। যেমন— ক্ষীরসা দই, শেরপুরের দই, বগুড়ার দই, টক দই, শ্রীপুরী, ডায়াবেটিস দইসহ এ হরেক রকমের দই বিক্রি হয় ।
বিশেষ করে বগুড়ার শেরপুর, চান্দাইকোনা, শ্রীপুর, সিরাজগঞ্জের তাড়াশের দই প্রচুর বেচাকেনা হয়।
স্থানীয় দই বিক্রেতা আনন্দ ঘোষ বলেন, দুধের দাম, জ্বালানি, শ্রমিক খরচ, দই পাত্রের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দইয়ের দামও বৃদ্ধিও পাচ্ছে। তবে চাহিদা থাকার কারণে কোনো ঘোষের দই অবিক্রীত থাকে না। যার কারণে মেলার আগেই ঘোষেরা দই তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।