রাজশাহীসহ আশপাশের এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কনকনে ঠাণ্ডা কুয়াশা বৃষ্টির কারণে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের ছয় জেলায় জনজীবন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
রোববার রাজশাহীতে সারাদিনই সূর্যের দেখা মেলেনি। দিনের মধ্যভাবে কুয়াশার ঘনত্ব কিছুটা কমলে কিছু সময়ের জন্য মানুষের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
রাজশাহী অঞ্চলের মাঠ-ঘাট নদী অঞ্চল সারাদিনই কুয়াশায় আচ্ছন্ন থেকেছে। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় জবুথবু পড়ে পড়েছে প্রকৃতি ও জনজীবন।
রাজশাহীতে রোববার সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হলেও সন্ধ্যায় তা নেমে যায় ১১ ডিগ্রিতে। ফলে দিনের শেষে কনকনে ঠাণ্ডা জেঁকে বসে।
এদিকে ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় পশ্চিমাঞ্চল রেলের বিভিন্ন লাইনে দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে ট্রেন চলাচল করেছে। ধীরগতিতে ট্রেন চলাচল করায় পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন ডিভিশন ও লাইনে দেখা দিয়েছে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, পশ্চিমাঞ্চল রেলের রাজশাহী, খুলনা, দিনাজপুর, রংপুর লাইনের প্রতিটি ট্রেন সর্বনিম্ন দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে চলাচল করছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন রেল যাত্রীরা।
রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী চারটি আন্ত:নগর এক্সপ্রেস ট্রেন কয়েক ঘণ্টা দেরিতে চলাচল করছে। রাজশাহী থেকে খুলনা, নীলফামারী, ও পঞ্চগড় লাইনের ট্রেনগুলোও ছেড়েছে দুই থেকে তিন ঘণ্টা বিলম্বে।
এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে সড়কপথে বাস দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রেলপথে যাত্রীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। রোববার বছরের প্রথমদিনে ভোর থেকে রাজশাহী রেলস্টেশনে বিভিন্ন লাইনের যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল লক্ষণীয়।
সকালে রাজশাহী রেলস্টেশনে অপেক্ষমাণ ঢাকাগামী বনলতা ট্রেনের যাত্রী মামুন হোসেন বলেন, সকাল ৭টায় ট্রেনটি রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে; তিনি ভোরে রাজশাহীর তানোর থেকে সিএনজিযোগে রাজশাহী আসেন। তবে বনলতা ট্রেনটি প্রায় এক ঘণ্টা বিলম্বে রাজশাহী ছাড়ে।
ঘন কুয়াশায় ট্রেনে সিডিউল বিপর্যয়ের বিষয়ে পশ্চিম রেলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, প্রতিটি ট্রেনকে যথাযথ সিগন্যাল মেনে চলতে হয়। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে সেই সিগন্যাল চালকের দেখতে সমস্যা হওয়ায় ট্রেনগুলো নির্ধারিত গতির চেয়ে কম গতিতে চলছে। এ কারণে অনেক ট্রেনই নির্ধারিত সময়ে স্টেশনে আসতে পারছে না। আবার ছাড়তেও দেরি হচ্ছে। তবে আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ট্রেনের সিডিউল স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী-ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী দূরপাল্লার পরিবহনও কয়েক ঘণ্টা করে বিলম্বে চলছে। শনিবার রাতের গাড়িগুলো রোববার দুপুরে রাজশাহী এসে পৌঁছায়।
দেশ ট্রাভেলসের চালক আব্দুর রাজ্জাক জানান, মহাসড়ক কুয়াশায় ঢেকে থাকছে। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে গাড়িগুলো গতি কমিয়ে চলাচল করছে।
এদিকে রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘন কুয়াশায় সড়ক মহাসড়ক ও নদী অববাহিকায় দৃষ্টিসীমা ১০০ মিটারের মধ্যে নেমে আসার সম্ভাবনা আছে। রোববার রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সূর্যের আলো না ফোটায় বেশি শীত ও ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে। আরও কয়েক দিন এ পরিস্থিতি চলতে পারে।