বুয়েটে ‘শহুরে পুকুর ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক কর্মশালা
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৬ পিএম
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের লেভেল-৪, টার্ম-২ এর শিক্ষার্থীরা বিভাগের সেমিনার কক্ষে বুধবার ‘স্থানীয় উদ্যোগে পুকুর ব্যবস্থাপনা, সমস্যা এবং সম্ভাব্য সমাধান’ শীর্ষক একটি কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদের চেয়ারম্যান এবং ঢাকার আটটি পুকুরের ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ।
কর্মশালাটি দুটি পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালার সভাপতি ড. ইশরাত ইসলামের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে প্রথম পর্ব শুরু হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের গবেষণালব্ধ ৮টি পুকুরের প্রাপ্ত তথ্যাদি এবং গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। উপস্থাপনা করেন উক্ত বিভাগের লেভেল-৪ টার্ম-২ এর তিনজন শিক্ষার্থী. তারা শহরের এই ৮টি পুকুরের বর্তমান অবস্থা এবং তার ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়সমূহ তুলে ধরেন। গবেষণায় দেখা যায় সবগুলো পুকুরই মুঘল ও ব্রিটিশ আমল থেকে এলাকাবাসীর পানির চাহিদা পূরণ করে আসছে।
এখন কালের বিবর্তনে অধিকাংশ পুকুরের পানিই দূষিত। এসকল পুকুরগুলো স্থানীয়ভাবে রক্ষণাবেক্ষণের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে, এসব পুকুরগুলো পানি দূষণ, পাড় দখল, এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সংকটাপন্ন। এছাড়া, বেশ কিছু পুকুরে মালিকানাজনিত সমস্যা থাকার কারণে রক্ষণাবেক্ষণে অসুবিধা হচ্ছে। যদিও এই পুকুরগুলো এলাকার প্রাণকেন্দ্রস্বরূপ এবং অগ্নিনির্বাপণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কালিবাড়ী পুকুরে বর্জ্য দূষণ পুকুরের পরিবেশ বিঘ্নিত করেছে। বংশাল পুকুরের আশপাশের দোকানপাট রাস্তা দখল করে রেখেছে। সিক্কাটুলি পুকুরের নিকটস্থ STS পুকুর দূষণের অন্যতম কারণ। লালমাটিয়া বিবি মসজিদ পুকুরটি দোকান দিয়ে ঘেরা। এখানে উল্লেখ্য যে, স্থানীয় জনগণ পুকুরগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ কাজে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
অনুষ্ঠানের পরবর্তী ভাগে অংশগ্রহণকারীদের সমন্বয়ে আলোচনার জন্য দল গঠন করা হয়। এই কর্মশালায় এলাকা বাসীর পক্ষ থেকে পুকুর ব্যবস্থাপনায় জড়িত ব্যক্তিবর্গ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।
উপস্থিত অংশীজনদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে পুকুর ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বেশকিছু সমন্বিত প্রস্তাবনা যেমন: রাজনৈতিক প্রভাবমুক্তকরণ, পুকুরের শোভাবর্ধণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যেমন পয়ঃনিষ্কাধন এর লাইন এবং STS অপসারণ এর কথা উঠে আসে . এছাড়া পুকুর কেন্দ্রিক কার্যকলাপ যেমন মাছ ধরা, সাঁতার এর ব্যবস্থা, হাঁটার পথ, আলো, বসার জায়গা এর মত প্রস্তাবনা দেয়া হয়, যার মাধ্যমে মানুষকে পুকুর কেন্দ্রিক কাজ এ উৎসাহী করা যাবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পুকুর সংক্রান্ত কাজের ক্ষেত্রে মালিকানা একটি বিবেচ্য বিষয়, যা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট নগর কর্তৃপক্ষের এর সাহায্য চেয়েছেন উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ. অতঃপর বুয়েটের নগর ও পরিকল্পনা বিভাগেরভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান ড. আফসানা হকের ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং সমাপনী বক্তব্যের মধ্য থেকে কর্মশালাটির সমাপ্ত ঘটে।