Logo
Logo
×

কর্পোরেট নিউজ

বাংলাদেশে জেরার ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ

Icon

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৩ পিএম

বাংলাদেশে জেরার ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ

জাপান’স এনার্জি ফর অ্যা নিউ এরা [জেরা] হলো- জাপানের বৃহত্তম বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শক্তি কোম্পানি; যার বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতা কমবেশি ৬১,০০০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে জাপানে (যা জাপানের বিদ্যুতের ৩০%) এবং বিদেশী বিশেষ করে ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ অন্যান্য দেশে ১৩,৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। 

জাপানিজ এই প্রতিষ্ঠান জেরা কো. ইন্টারন্যাশনাল তাদের অধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে এলএনজি সরবরাহ করে। জেরা এই খ্যাতে প্রায় ৩৫ এমটিপিএ এলএনজি সরবরাহ করে। যা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ৬টি আপস্ট্রিম প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয়েছে। পাশাপাশি তারা ১৫টি দেশে এলএনজি সরবরাহ করছে।

বাংলাদেশে জেরার ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ

২০১৯ সালে জাপানের জেরা ভারতীয় রিলায়েন্সের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে মেঘনাঘাট ৭১৮ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্টের অধিগ্রহণ করে। এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের বৃহত্তম গ্যাসভিত্তিক আইপিপি। প্রকল্পটিতে জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জাইকার মতো বেসরকারি খাতের উন্নয়ন ব্যাংক), এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ দাতা ব্যাংক) এর উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ রয়েছে। 

প্রকল্পে বিনিয়োগকারী অন্যান্য ব্যাংকগুলো হলো- মিজুহো ব্যাংক, SMBC, MUFG, Societe Generale; যার সবকটিই নিপ্পন এক্সপোর্ট এবং ইনভেস্টমেন্ট ইন্স্যুরেন্স দ্বারা সমর্থিত। প্রকল্পটি জেনারেল ইলেকট্রিক (জিই) থেকে প্রধান সরঞ্জামগুলো সুরক্ষিত করেছে এবং স্যামসাং সিএন্ডটি কর্পোরেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট এবং নির্মাণ চুক্তির ভিত্তিতে প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছে।

জেরা মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেড ২০১৯ সালে বাংলাদেশে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করে। প্রকল্পের গ্যাস পাইপলাইন বা পাওয়ার গ্রিডসহ বিভিন্ন অবকাঠামো বির্নিমাণ এবং গ্যাসলাইন সঞ্চালন করতে ধাপে ধাপে বিলম্বের মুখে পড়ে। এই সময়ে সামিট এবং ইউনিকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বিদ্যুৎ ও গ্যাস পাইপলাইন সংযোগ এবং গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেলেও জেরা-এর প্রকল্পটি ঠিকঠাক সরকারের যথাযথ সহায়তা পায়নি। ফলে জেরা নিজ উদ্যোগ এবং খরচে শাখা পাইপলাইন তৈরি করতে হয়। 

পূর্ণাঙ্গ লাইন এবং সাইডলাইনের কাজ শেষ হওয়ার পর গ্যাস সরবরাহ করা হয়। নানা ঝক্কি-ঝামেলা পেরিয়ে জারার প্রকল্পটি ৮ মাস আগে চালু হয়েছে। তবে প্রকল্প পরিচালনার জন্য নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস পেতে হিমশিম খাচ্ছে। এ ব্যাপারে জেরা মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেডের হেড অফ কন্ট্রাক্টস অ্যান্ড কমার্শিয়াল স্মিতেশ বৈদ্য বলেন, প্রকল্পটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং অব্যাহত গ্যাস সরবরাহের সাপেক্ষে এটি চালু হতে আর মাত্র কয়েক দিন দূরে। 

তিনি বলেন, ‘স্পন্সর হিসেবে জেরা-এ প্রকল্পে নানাভাবে সহায়তা করছে। সেই কারণেই এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে। আমরা এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বাণিজ্যিক কার্যক্রম অর্জনের জন্য মন্ত্রণালয়, বিপিডিবি এবং পেট্রোবাংলার কাছ থেকে সহায়তার আশা করেছি। অত্যাধুনিক সুবিধা, সবচেয়ে দক্ষ টারবাইন এবং কম শুল্ক-সহ, জেরা মেঘনাঘাট প্রকল্প বাংলাদেশের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার জন্য একটি বড় উদারণ সৃষ্টি করবে।’

জেরা মাতারবাড়িতে এলএনজি টার্মিনাল করতে আগ্রহী

নতুনভাবে আলোকিত মাতারবাড়িতে এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করতে ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছে জেরা। উল্লেখ্য জারা; জাপানে ১১টি এলএনজি টার্মিনাল পরিচালনা করে, যার সবগুলোই জমিভিত্তিক। জাপান পরিবেশগত বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে এবং এই ধরনের জমিভিত্তিক টার্মিনালগুলো দেশকে শক্তির একটি স্থিতিশীল উৎস সরবরাহ করে। অন্যদিকে, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় এবং খারাপ আবহাওয়ার প্রবণতা সত্ত্বেও, বাংলাদেশের ২টি ভাসমান জাহাজভিত্তিক এফএসআরইউ রয়েছে। 

শুধুমাত্র এই বছরে, অন্তত ১টি ঋঝজটং ৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে অপারেশনের জন্য উপলব্ধ ছিল না, যা উল্লেখযোগ্যভাবে গ্যাস সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করেছে। অতএব, এটি জাতির স্বার্থে যে অন্তর্বতী সরকার অবিরাম জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে দ্রæত দেশে জমিভিত্তিক টার্মিনাল স্থাপনের দিকে নজর দিচ্ছে।

সম্প্রতি তত্ত¡বধায়ক সরকারের কাছে জানিয়েছে; তারা বাংলাদেশে জমিভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্প, পুনঃনবায়নযোগ্য প্রকল্প উন্নয়ন (সৌর, বায়ু), বিকল্প শক্তি (হাইড্রোজেন, অ্যামোনিয়া) এবং এলএনজি সরবরাহে ভবিষ্যতের বিনিয়োগে আগ্রহী। এই ধরনের বিনিয়োগ আগামী ৫-১০ বছরে প্রায় ২-৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এফডিআই হবে। দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিকোণ থেকে, জেরা বাংলাদেশের জন্য সাক্যুলে শূন্য গ্যাস নির্গমণ বিষয় নিয়ে সুবিনস্ত্য পরিসরে কাজ করছে। পাশাপাশি দেশের টেকসই ভবিষ্যতের জন্য এক সাথে কাজ করতে আগ্রহী। ভবিষ্যতে জেরা বাংলাদেশে স্থায়ী অফিস স্থাপনের চিন্তা-ভাবনা করছে।

জাপান-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই জাপান বাংলাদেশের শক্তিশালী বন্ধু। জাপানের অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ বেশ কিছু অবকাঠামো প্রকল্প স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। নির্বিঘ্নেই বলা যায়- বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিতে জাপান নানাভাবে অবদান রাখছে। আচরনগতভাবে জাপানিজরা নম্র ও সভ্য। জাপানিরা কখনই কাউকে কোনো কাজ করার জন্য চাপ দেয় না। এমন কী কোনো অন্যায়ের বিপক্ষেও সাধারণত অভিযোগ করে না। 

এমন কী এই সময়েও তারা পেছনের কথা না টেনে অন্তর্বতী সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছে বাংলাদেশে বিদ্যমান পাওয়ার খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সরকার যেমন আচরন করে আসছে- তাদের সঙ্গেও যেনো তাই করা হয়। জেরা-এর মতো কোম্পানিগুলো জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার অনুরোধ করেছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম