রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে অসংগতি আছে তা তুলে ধরতে সবাইকে নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন কুমিল্লায় আলোচনা সভায় উপস্থিত বিশিষ্টজন ও রাজনীতিবিদরা। এক্ষেত্রে তরুণরাই প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারে বলে তারা মনে করেন।  

সম্প্রতি কুমিল্লায় নজরুল ইনস্টিটিউটে আয়োজিত ‘তরুণদের কর্মসংস্থান, প্রত্যাশা ও সুপারিশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে ও ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের আয়োজনে ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইনের আওতায় এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।  

সভায় কুমিল্লার মাল্টিপার্টি এডভোকেসি ফোরামের (এমএএফ) সভাপতি বদরুল হক জেনু বলেন, ‘সবাই যদি নিজ নিজ অবস্থানে সচেতন না হয়, তবে বৈষম্য দূর হবে না। সামাজিক উন্নয়ন হবে না।’ তিনি বলেন, তরুণ এবং শিল্প উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নেও এগিয়ে আসতে হবে। তরুণদের সম্পৃক্ততা নাগরিক উন্নয়নে জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে।’

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক সংসদ সদস্য এবং বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন বলেন, ‘তরুণদের অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির কল্যাণে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারে। এজন্য জনপ্রতিনিধিসহ সামাজিক-রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে হবে। তরুণদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়েই ভবিষ্যৎ গঠনে উদ্যোগ নিতে হবে।’ 

তরুণদের আরও বেশি সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গতানুগতিক শিক্ষার মাধ্যমে তরুণদের বেকারত্ব দূর হবে না। ব্যবসায় মনোযোগ দিতে হবে, নিজে কিছু করার ইচ্ছা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’

এসময় বক্তারা তরুণদের প্রযুক্তি দক্ষতা অর্জন ও কর্মমুখী শিক্ষা গ্রহণের প্রতি জোর দেন। সেইসঙ্গে, রাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশীজনকে তরুণদের প্রশিক্ষাণ, কর্মসংস্থান ও উন্নয়নের সুবিধা তৈরি করে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। 

রংতুলি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সাইফ বাবু ও সমাজকর্মী ফারজানা নিশাতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইন সম্পর্কে জানান ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের রিজিওনাল ম্যানেজার আবুল বাশার। 

তিনি বলেন, ‘আজকের তরুণদের নাগরিক ভাবনা আগামীর দেশ গঠনে সহায়তা করবে। সকলের স্বতন্ত্র চিন্তার মাধ্যমেই জিতে যাবে আমাদের দেশ।’

ইউএসএআইডির স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্পের আওতায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সারাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলায় আলোচনা, নাট্য প্রদর্শনী, বিতর্ক প্রতিযোগিতাসহ নানা কর্মসূচি পরিচালনা করছে। 

অনুষ্ঠানে আলোচনা সভা ছাড়াও ইন্টারেক্টিভ থিয়েটার, কুইজ ও ভিডিও মেসেজ প্রতিযোগিতা এবং ক্যাম্পেইনের রিল প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অংশগ্রহণকারীরা সমকালীন বিভিন্ন ইস্যুর সমাধান নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার আশরুপা হক চৌধুরী ও কমিউনিকেশন অফিসার সোহরাব হোসেন, কুমিল্লার ওয়াইডব্লিউসিএ স্কুলের সাধারণ সম্পাদক আইরিন মুক্তা অধিকারী, জায়ান্ট মার্কেটার্সের সিইও মাসুম বিল্লাহ, কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস, এমএএফ সহসভাপতি রাশেদা আক্তার ও জোসনা আক্তার।