ই-পিএমআইএস-এ তথ্য দিতে পরিচালকদের প্রতি আহবান
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৬ পিএম
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অধীনে বিভিন্ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকদের (পিডি) তাদের প্রকল্পের সকল তথ্য বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) ইলেকট্রনিক প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে (ই-পিএমআইএস) সরবরাহ এবং আপডেট করতে আহবান করা হয়েছে।
সোমবার ঢাকার এনইসি অডিটোরিয়ামে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডি-এর বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) আয়োজিত ই-পিএমআইএস সফটওয়্যার সম্পর্কে স্টেকহোল্ডারদের অবহিতকরণ সংক্রান্ত এক কর্মশালায় এ অনুরোধ করা হয়।
দেশে ক্রয় পরিবেশের উন্নতি এবং সরকারি ক্রয়ে পেশাদারিত্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে গত বছর সিপিটিইউকে বিপিপিএ-তে রূপান্তরিত করা হয়।
কর্মশালাটি বিপিপিএর ডিজিটাইজিং ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং অ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রজেক্ট (ডিআইএমএপিপিপি) এর অধীনে অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্বব্যাংক জুলাই ২০১৭ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত ডিআইএমএপিপিপিকে সহায়তা দিয়েছে। ই-পিএমআইএস ডিআইএমএপিপিপি-এর অধীনে তৈরি ও কার্যকর করা হয়।
মোট ৫০টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং সংস্থার প্রতিনিধিরা কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন যারা তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে ই-পিএমআইএস-এর বিভিন্ন দিক এবং ব্যবহার নিয়ে মতবিনিময় করেন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইএমইডি’র সচিব জনাব আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইএমইডি’র অতিরিক্ত সচিব ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, সভাপতিত্ব করেন বিপিপিএ’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মির্জা আশফাকুর রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সিনিয়র প্রকিউরমেন্ট স্পেশালিস্ট জনাব আরাফাত ইশতিয়াক।
বিপিপিএ-এর পরিচালক (উপ-সচিব) আফরোজা পারভীন ই-পিএমআইএস-এর উদ্দেশ্য, বৈশিষ্ট্য, কার্যাবলী, সুবিধা, অন্যান্য সরকারি সফটওয়্যারগুলির সাথে আম্তসংযোগকরণ এবং চ্যালেঞ্জসমূহের উপর একটি বিস্তারিত উপস্থাপনা করেন। উপস্থাপনায় তিনি অনলাইন মনিটরিং সিস্টেমে বিভিন্ন প্রকল্পের পিডি দ্বারা প্রদত্ত প্রকল্প তথ্যের অবস্থাও তুলে ধরেন।
আইএমইডি সচিব বলেন, একটি সমৃদ্ধ ও বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার সকল ক্ষেত্রে সংস্কার আনতে কাজ করছে এবং সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সকলের মানসিকতার সংস্কার করা জরুরী এবং তাই মানুষ ও যন্ত্র উভয় ক্ষেত্রেই সংস্কার প্রয়োজন।
ই-পিএমআইএস-এর সাহায্যে প্রকল্প পরিচালকরা ঝামেলা ছাড়াই প্রকল্প বাস্তবায়ন তত্ত্বাবধানে সক্ষম হবেন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রকল্প পরিচালকদের সবসময় মাঠ পরিদর্শন করা সম্ভব নয় কারণ তাদের একাধিক প্রকল্প পরিবীক্ষন করতে হয়।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ই-পিএমআইএস ধীরে ধীরে অন্যান্য সিস্টেমের সাথে এমনভাবে আন্তসংযোগ করা হবে যাতে অন্যান্য সিস্টেম থেকে ডেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এতে আপলোড হয় যা এই সিস্টেমটিকে আরও কার্যকর করে তুলবে। বর্তমানে এটি এনআইডি, ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) এবং প্রজেক্ট প্রসেসিং, অ্যাপ্রাইজাল এবং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (পিপিএস) এর সাথে আন্তসংযোগ করা হয়েছে। আর IBAS+ এর সাথে শীঘ্রই করা হবে।
প্রকল্প মূল্যায়ন নীতিমালা প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকার শীঘ্রই পূর্ণাংগ প্রকল্প নির্দেশিকা প্রণয়ন করবে।
বিপিপিএ’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু ই-পিএমআইএস একটি ওয়েব-ভিত্তিক সফটওয়্যার, তাই বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে এর মাধ্যমে কাজ করা সম্ভব। যদি এই প্ল্যাটফর্মে সমস্ত তথ্য আপলোড করা হয়, তাহলে এটি একটি জাতীয় ডাটাবেস তৈরি করবে এবং সেগুলো অফিস থেকে দেখা যাবে।
ড. সুভাষ বলেন, ই-পিএমআইএস, প্রকল্পে নিয়োজিত সকল স্টেকহোল্ডারদের জন্য উপযোগী করে তুলবে কারণ এটি খুবই পদ্ধতিগত এবং খুব ভাল একটি প্ল্যাটফর্ম।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি বলেন, একটি নতুন ব্যবস্থা হিসেবে ই-পিএমআইএসের চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং এর অধিক ব্যবহার এটিকে আরও সুবিধাজনক ও ব্যবহারকারী-বান্ধব করে তুলবে।
ই-পিএমআইএস সিস্টেম একটি আধুনিক পদ্ধতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্যান্য সিস্টেমের সাথে এর আন্তসংযোগ সিস্টেমে রিয়েল-টাইম ডেটা আপলোড করতে সাহায্য করবে। যখন একটি সিস্টেমের ডেটা অন্য প্ল্যাটফর্মে লোড করা সম্ভব হবে তখন ব্যয় ও সময় কমবে। এটি উন্নত প্রকল্প ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে মোট ১,৩৪৩টি প্রকল্প রয়েছে যার মধ্যে ১,২৫৬টির পিডি ই-পিএমআইএস-এর সাথে নিবন্ধিত হয়েছে। কর্মশালায় আমন্ত্রিত ৫০টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার মধ্যে ই-পিএমআইএসে ২৬টি প্রতিষ্ঠানের এডমিন সৃস্টি করা হয়েছে বলে উপস্থাপনায় উল্লেখ করা হয়।