চাঁদপুরে ই-জিপি সচেতনতা কর্মশালায় আইএমইডি সচিব
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৩৯ পিএম
সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, ক্রয় প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং ক্রয় কাজে অবাধ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ ও দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
সরকারের উন্নয়ন বাজেটের পরিমাণ প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে অনুযায়ী সরকারি ক্রয়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়াজনিত বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) গঠন করা হয়েছে। আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, সচিব বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি), পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় একথা বলেন।
শনিবার চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত ই-জিপি সচেতনতামূলক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন। মো. শোহেলের রহমান চৌধুরী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিপিপিএ, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব কামরুল হাসান এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি)-এর বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) ডিজিটাইজিং ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং এন্ড পাবলিক প্রকিইউরমেন্ট প্রজেক্ট (ডাইম্যাপ) এর আওতায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বিপিপিএ ডাইম্যাপ বাস্তবায়ন করছে।
কর্মশালার সার্বিক ব্যবস্থাপনা করেছে বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস্ (বিসিসিপি)। ডা. জিনাত সুলতানা, প্রোগ্রাম ডিরেক্টর অনুষ্ঠানে ই-জিপির উপর একটি উপস্থাপনা পেশ করেন। মো: আবদুস সালাম, এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর, বিসিসিপি-র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় জেলার ক্রয়কারী কর্মকর্তা, দরপত্রদাতা, ব্যাংকের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকগণ অংশগ্রহণ করেন। আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে ই-জিপি এখন সফল এবং সারাবিশ্বে এটি এখন সুবই সমাদৃত।
বাংলাদেশে সরকারি ক্রয় ব্যবস্থার সংস্কার এবং ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) সিস্টেম সম্পর্কে জানতে ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা সিপিটিইউ পরিদর্শন করেছে। ২০৩০ এর মধ্যে টেকসই সরকারি ক্রয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে টেকসই সরকারি ক্রয় নীতিও ইতোমধ্যে অনুমোদন করা হয়েছে।
সরকারি ক্রয়ে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত দিক বিবেচনাসহ আরও কিছু মৌলিক বিষয় যুক্ত করার উদ্দেশ্যে এই টেকসই সরকারি ক্রয় নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। মো. শোহেলের রহমান চৌধুরী বলেন, বিপিপিএ (সাবেক সিপিটিইউ) দেশে ই-জিপি তথা সরকারি ক্রয় ব্যবস্থা বাস্তবায়ন তদারকি করছে। ই-জিপিকে আরো কার্যকর করার উদ্দেশ্যে বেশকিছু উল্লেখযোগ্য মডিউল সংযোজন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে পুরো সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াই এখন অনলাইনে করা যায়।
ই-জিপিতে টেন্ডারার্স ডাটাবেজ একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন্ দরপত্রদাতাগণ তাদের কাজের অভিজ্ঞতার তথ্যগুলো টেন্ডারার্স ডাটাবেজে আপলোড করেন, ফলে তাদের অভিজ্ঞতার তথ্যগুলো সিস্টেম থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জেনারেট হয় এবং তাদের অন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এতোদিন টেন্ডার ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে টেন্ডারারদের ফি জমা দিতে ও পেমেন্ট স্লিপ সংগ্রহ করতে ব্যাংকে যেতে হতো, ক্রয়কারীর অফিসে যেতে হতো এবং ক্রয়কারীর অনুমতি জন্য অপেক্ষা করতে হতো।
এখন তাদের আর কোনো ব্যাংকে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না এবং নিজেদের অফিসের ল্যাপটপে এ-চালানোর মাধ্যমে পেমেন্ট করে তারা পাঁচ মিনিটের মধ্যে টেন্ডার ডকুমেন্ট ডাউনলোড করতে পারবেন। আমরা সিস্টেমে ডিরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথড বা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি (ডিপিএম) যুক্ত করেছি। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিটিভ বিডিং (আইসিবি) অর্থাৎ আন্তর্জাতিক দরপত্র মডিউল চালু করেছি।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হলো ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ই-সিএমএস)। এর মাধ্যমে পুরো সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া ই-জিপি সিস্টেমে আনার কাজটি সম্পন্ন হলো। আরেকট বড় কাজ আমরা করেছি। ক্রয়কারীকে ক্রয় সংক্রান্ত নীরিক্ষার জন্য আর নীরিক্ষকের অফিসে যেতে হবে না। ক্রয়কারী কার্যালয়ের কর্মকর্তারা তাদের অফিসে বসেই কাজ করতে পারবেন। ক্রয় পদ্ধতি সুরক্ষিত করতে টেন্ডারারদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। এজন্য আমরা ই-জিপি সিস্টেমকে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সঙ্গে সমন্বয় করেছি।