টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আগ্রহ বাড়ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ১০:০৯ পিএম
গত কয়েক বছরে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আগ্রহ বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর অনুমোদিত একমাত্র টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ এর জিওসাইকেল এক্ষেত্রে রাখছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা।
বছর তিনেক আগেও কিছু কোম্পানি থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্য পণ্য, এফএমসিজি’র পণ্য এবং তেল ও গ্যাস হতে সৃষ্ট বর্জ্য পেলেও এখন বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির পাশাপাশি দেশীয় কোম্পানিগুলো নিজেদের বর্জ্য টেকসই ব্যবস্থাপনার জন্য জিওসাইকেল এর উপর ভরসা রাখছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক শিল্প, ওষুধ শিল্প, কাগজের কারখানা, জুতা তৈরির কারখানা এবং চামড়া শিল্প অন্যতম।
টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জিওসাইকেল এর নাম বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। বিশ্বের প্রায় ৭০ টি দেশে এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশে এর কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ২০১৭ সালে। বর্জ্য শুণ্য একটি ভবিষ্যৎ উপহার দেয়াই জিওসাইকেল এর লক্ষ্য।
হেড অব জিওসাইকেল বাংলাদেশ, কৌশিক মুখার্জি’র সাথে কথা বলে জানা যায়, “সিমেন্ট শিল্পের মূল কাঁচামাল ক্লিংকার তৈরির সুবিধা রয়েছে এমন সব কারখানাতেই টেকসই উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব।
বাংলাদেশের একমাত্র স্বয়ংসম্পুর্ণ সিমেন্ট উৎপাদন প্ল্যান্ট রয়েছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড এর যেখানে ক্লিংকার তৈরি হয়। ক্লিংকার তৈরি করতে উচ্চ তাপমাত্রা প্রয়োজন। এই উচ্চ তাপমাত্রায় নানা ধরনের বর্র্জ্য টেকসই উপায়ে ধ্বংস করা যায়, যার পরিবেশের উপর কোন ক্ষতিকর প্রভাব নেই।”
বাংলাদেশের শহরগুলোতে প্রতিদিন প্রায় ৪৭ হাজার টনের মতো বর্জ্য উৎপন্ন হয় যার একটা বড় অংশ অপরিকল্পিত উপায়ে মাটির নিচে পুতে ফেলা হয় এবং পুড়িয়ে ফেলা হয় যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
জিওসাইকেল বাংলাদেশ প্রতিদিন এক হাজার টনের বেশি বর্জ্য টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনা করতে সক্ষম। স্বয়ংক্রিয় ফিডিং সিস্টেম সম্বলিত সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইউনিটটি স্থাপনে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য পরিমান অর্থ বিনিয়োগ করেছে।
স্বল্প খরচে নিজেদের তৈরি বর্জ্য টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনা করতে জিওসাইকেল হতে পারে উল্লেখযোগ্য সমাধান বলে মন্তব্য করেছেন মাগুরা পেপার মিলের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন। তিনি জানান “কাগজ আমাদানির সময় এক ধরনের পলিথিনের মোড়ক থাকে যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এই বর্জ্য আমরা আগে এক জায়গায় স্তুপ করে রাখতাম, পরে তা অন্যত্র স্থানান্তর করা হতো। এর ফলে অতিরিক্ত শ্রমিক এবং জায়গা লাগতো।”
এখন তারা জিওসাইকেলের মাধ্যমে তাদের বর্জ্য টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনা করছেন। পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই তারা এগিয়ে এসেছেন এবং তিনি মনে করনে অন্যদেরও এগিয়ে আসা উচিৎ।
কৌশিক মুখার্জি জানান, তারা বিভিন্ন ধরনের নন রিসাইকেলেবল পণ্য টেকসই উপায়ে ধ্বংস করে থাকেন। প্রথমে তারা বর্জ্যরে নমুনা সংগ্রহ করেন এবং তা পরীক্ষা করেন। তারপরই তারা সেবা গ্রহীতার সাথে চুক্তি করেন। চুক্তি মোতাবেক গ্রাহকের সকল বর্জ্য টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনার পর তাদেরকে সনদ প্রদান করা হয়।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি জানান, “আমরা বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানকে টেকসই উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব বোঝানোর চেষ্টা করছি এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে নিবিঢ়ভাবে কাজ করছি যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”