Logo
Logo
×

কর্পোরেট নিউজ

গ্রামাঞ্চলের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের স্বপ্নপূরণে সঙ্গী এনআরবিসি ব্যাংক

Icon

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৩, ১০:১২ পিএম

গ্রামাঞ্চলের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের স্বপ্নপূরণে সঙ্গী এনআরবিসি ব্যাংক

গাইবান্ধার আরিফ খা বাসুদেব পুর গ্রামের বাসিন্দা মহিদুল ইসলাম। ২০১৮ সালে নিজ বাড়ীতে মৃৎশিল্প স্থাপনে মাত্র ৫০ হাজার টাকা ঋণের জন্য গেছেন বিভিন্ন ব্যাংকে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো আর অন্যান্য কাগজপত্র না থাকায় ঋণ মেলেনি। এক সময় হাজির হন এনআরবিসি ব্যাংকের প্রফেসর কলোনি উপশাখায়। জামানতবিহীন ৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে মাটির পাত্র তৈরির মেশিন  ও মাটি  কিনে শুরু করেন মৃৎশিল্প। এখন তার ওই ক্ষুদ্র উদ্যোগে কাজ করেন ৩০ জন কর্মী। শুধু মহিদুল ইসলাম নয় চাঁদপুরের নূর মোহাম্মদ, নীলফামারীর কায়দুজ্জামান, বগুড়ার লিপি খাতুন, রংপুরের চান মিয়া সফল উদ্যোক্তা হয়েছেন এনআরবিসি ব্যাংকের ঋণ সহায়তা পেয়ে। এভাবে সারাদেশে সাড়ে ৫২ হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার স্বপ্ন পূরণে সঙ্গী হয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক।

২০১৩ সালের ২ এপ্রিল ৫৩ জন প্রবাসী উদ্যোক্তাদের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে এনআরবিসি ব্যাংক। ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা ব্যাংকটির।  স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে তাই এনআরবিসি ব্যাংক বেছে নেয় দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পিছিয়ে পড়া মানুষদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সহজশর্ত ও স্বল্পসুদে ঋণ দিতে ২০২১ সালের মার্চে বিশেষ ক্ষুদ্রঋণ চালু করে এনআরবিসি ব্যাংক। জামানতবিহীন এই ঋণ সুবিধা খুব অল্প সময়ে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে  দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫২ হাজার ৫০০ জন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ঋণ পেয়েছেন। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ক্ষুদ্রঋণ। এই সেবার দ্রুত প্রসারের স্বীকৃতি স্বরুপ ‘ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং মাইক্রো ফাইন্যান্স ব্যাংক-২০২২’ প্রদান করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ম্যাগাজিন  দি গ্লোবাল ইকোনমিক্স। 
এনআরবিসি ব্যাংক সূত্র জানায়, গ্রামাঞ্চলে যেখানে ব্যাংকের শাখা নেই সেখানে উপশাখা স্থাপন করা হচ্ছে। প্রথাগত পদ্ধতিতে যেসব মানুষেরা ব্যাংক ঋণ পাননা তাদেরকে এই ঋণের আওতায় আনা হচ্ছে। কেননা ব্যাংক ঋণের সুবিধা না থাকায় এসব মানুষের ব্যাংকবহির্ভূত বিভিন্ন উৎস থেকে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে বাধ্য হন। কর্মসংস্থানের অভাবে অনেকে নিজ এলাকায় ছেড়ে বিভিন্ন শহর উপশহরে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হন। পরিশ্রমী ও উদ্যোগী মানুষদের ঘরে বসে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে এই ঋণ দেওয়া হচ্ছে। অতিক্ষুদ্র, কুটির  ও ক্ষুদ্র উদ্যোগ গড়ে তোলা ও  সচল রাখার জন্য দেশগড়ি, সোনালী দিন, প্রবাস বন্ধু, বণিক সেবা, সুখী বাংলা, কারিগর, প্রয়োজন, সাশ্রয়ী ইত্যাদি সেবা চালু করেছে। এসব প্রোডাক্টের আওতায় মাত্র ৫ থেকে ৯ শতাংশ সুদে  চলতি মূলধন, মেয়াদি, স্বল্প মেয়াদি এবং মৌসুমী ঋণ দেওয়া হচ্ছে। 
গাইবান্ধার আরিফ খা বাসুদেব পুরের উদ্যোক্তা মহিদুল ইসলাম বলেন, এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ চালুর সময় বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে গিয়েছি। এনজিও থেকে ঋণ নেওয়া সহজ ছিল কিন্তু সুদহার অনেক বেশি। জামানত ও অন্যান্য জটিলতার কারণে অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পাওয়া যায়নি। এনআরবিসি ব্যাংক সহজেই এই ঋণ প্রদান করেছে। এখন আমার প্রতিষ্ঠান ৩০ জন মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
নীলফামারী জেলার খানাসামা উপজেলায় পাটজাত শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন কায়দুজ্জামান। তিনি বলেন, এনআরবিসি ব্যাংক থেকে ২০ লাখ টাকা ঋণ  সহায়তা নিয়ে এই তিস্তাপারের প্রত্যন্ত এই গ্রামে উদ্যোগটি বাস্তবায়ণ করেছি। ২৫ জন এই কারখানায় কাজ করেন। এর বাইরে এখানে বিভিন্ন পর্যায়ে ৪০০ জন যুক্ত আছেন।

ব্যাংকের  চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল বলেন, প্রবাসীদের স্বপ্নের এই ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে খুব সহজে সব মানুষের দুয়ারে ব্যাংকিং সেবা  পৌছে  দেওয়া। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষ যারা ব্যাংকিং  থেকে বঞ্চিত  থেকেছে তাদের জন্য চালু করেছি ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প। এতে বিনাজামাতে স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে ঘরে বসেই তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে। দেশের প্রতি  ও দেশের মানুষের প্রতি আমাদের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি। গরীব মেহনতি মানুষের ভরসা ও আস্থার ব্যাংকে পরিণত হতে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে এনআরবিসি ব্যাংক।

ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম আউলিয়া বলেন, প্রথাগত ব্যাংকিংয়ের বাইরে গিয়ে আমরা ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি। এখানে বেশি সংখ্যক মানুষকে আমরা সেবার আওতায় আনতে পেরেছি। একজন গ্রাহককে শত শত কোটি টাকা ঋণ না দিয়ে আমরা প্রান্তিক মানুষের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে ঋণ দিচ্ছি। 
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে এনআরবিসি ব্যাংক। সাধারণ মানুষের ব্যাংকিং  সেবা নিশ্চিত করতে সর্বপ্রথম উপশাখা ধারনায় ব্যাংকিং শুরু করে ব্যাংকটি। ইতোমধ্যে ১০৩টি শাখাসহ সারাদেশে দেড় হাজারেরও  বেশি উপশাখা, বুথ ও বিভিন্ন  সেবাকেন্দ্র রয়েছে। উদ্ভাবনী  সেবার জন্য এর আগে পর পর দুইবার ৬ ক্যাটাগরিতে এশিয়ার  সেরা ব্যাংক হিসেবে সাউথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক  বেস্ট ডিলার ব্যাংক, আরটিভি কৃষি পদক, এসিএস চালানের মাধ্যমে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ রাজস্ব সংগ্রহকারী ব্যাংকের স্বীকৃতি  পেয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম