শিশুর কানের সমস্যা
অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
* বহিঃকর্ণের প্রদাহ
বাইরের কর্ণের ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস জীবাণুঘটিত সংক্রমণ। এর ফলে ত্বক ছিঁড়ে শুকনা হয়ে অ্যাকজিমাও হতে পারে। আবার মধ্যকর্ণ প্রদাহ হলে সৃষ্ট পুঁজ কর্ণ পর্দা ভেদ করে বাইরে বেরিয়ে এসে এখানে ঘা তৈরি করতে পারে।
▶ রোগ লক্ষণাদি : বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুদের তেমন জ্বর থাকে না। তবে কর্ণের বাইরের অংশ বেশ ফোলা, লালচে ও গরমভাব থাকে। শিশু বেশ অস্বস্তিতে থাকে। প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে।
▶ চিকিৎসা : সাধারণ মাত্রায় কানের ড্রপ ও ব্যথা নিরোধক প্যারাসিটামলে কাজ হয়। কখনো মুখে খাবার অ্যান্টিবায়োটিকস লাগে।
▶ প্রতিরোধ : গোসলের পর বাচ্চার মাথার পানি তাড়াতাড়ি শুকনো তোয়ালে দিয়ে শুকিয়ে নেওয়া এবং তারও আগে মাথার পানি যেন কানের ভেতরে না ঢুকে পাশ দিয়ে বেড়িয়ে যায়, সে ব্যবস্থা করা। কান থেকে ১২ ইঞ্চি দূরে রেখে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করে কান ও পাশের চুল শুকিয়ে নিতে হবে। কখনো যেন কানে কোনো বস্তু ঢোকানো না হয়। কখনো যেন এ কাজে কটন বাড ব্যবহৃত করা না হয়।
* শিশু কানের মোম
ইয়ার ওয়াক্সকে বলা হয় কানের খৈল। এটি অনেক দরকারি কাজ সম্পাদন করে। গোসল শেষে এ খৈল এমনি বেরিয়ে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি খৈল ভেতরে আটকে গেলে শিশুর কানে ব্যথা, কানে শোনার সমস্যা হতে পারে। এ অবস্থায় কিউরিটি ও অটোসকোপ সংবলিত চিকিৎসায় বিষয়টি সুরাহা হয়ে যায় কয়েক মিনিটে। শিশু যদি কানে ব্যথার কথা জানায় এবং কানের মোম বাইরে থেকে দেখা যায়, তবে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে আলতোভাবে তা বের করুন। কখনো কটন সোয়াব, আঙুল বা কিছু ঢুকিয়ে তা বের করে আনার চেষ্টা করবেন না। এতে কানের পর্দা ছিঁড়ে যেতে পারে। শিশুর বধির হয়ে যাওয়ার মতো জটিলতা তৈরি হয়। তাছাড়া কানের খৈল ভেতরে ঢুকে ইনফেকশন তৈরি করে।
লেখক : শিশুরোগ ও শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, সাবেক অধ্যাপক ও পরিচালক, ঢাকা শিশু হাসপাতাল।